রমজান
এলেই পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার ‘সংস্কৃতি’
রমজান এলেই পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার ‘সংস্কৃতি’
বহুদিনের। এবার তার ব্যতিক্রম হয়নি। বেড়েছে চাল, আটা, ময়দা, ভোজ্য তেল, পেঁয়াজ,
হলুদ, চিনি, ডিম, জিরা, মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়তি দরে
খাদ্যপণ্য কিনতে সাধারণ মানুষকে বাধ্য করছেন। আর এ জন্য ব্যবসায়ীরাই ব্যবসায়ীদের
দুষছেন।
alt="kawran bazar (7)" v:shapes="_x0000_i1025">
এক
মাসে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০০ টাকা কীভাবে বাড়ে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন দেশের
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন,
পোলট্রি শিল্প যদি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে, তাহলে তাদের সুরক্ষা দেওয়া
বন্ধ করে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে উন্মুক্ত করে দিতে হবে মাংস ও ডিম আমদানি।
এ বিষয়ে পোলট্রি শিল্পের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলব। তাদের যদি উৎপাদন খরচ
বেড়ে যায়, তাহলে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কয়েক মাসের জন্য
মাংস ও ডিম আমদানির তাহলে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কয়েক মাসের জন্য মাংস ও ডিম আমদানির সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করব। তত দিনে দেশে দাম কমে আসবে।রাজধানীর মতিঝিলে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) এফবিসিসিআই
কার্যালয়ে বিভিন্ন বাজার কমিটি ও পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে
মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তবে সভায় পোলট্রি
শিল্পের কোনো ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা উপস্থিত ছিলেন না।এফবিসিসিআই সভাপতি
মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ভোজ্য তেল, চিনি, পেঁয়াজ, খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের
আমদানি, মজুত ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ৩ লাখ মেট্রিক টনের বেশি চিনি
রয়েছে, ভোজ্য তেলও চাহিদার তুলনায় বেশি মজুত আছে। নিত্যপণ্যের সরবরাহে ঘাটতির কোনো
শঙ্কা নেই।এমন পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য ব্যবসায়ী ও ভোক্তা
সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। বলেন, বৈশ্বিক কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যের
মূল্য বাড়লে ব্যবসায়ীদের কিছু করার থাকে না। তবে অবৈধভাবে কেউ যেন দাম বৃদ্ধি না
করে-আমরাও সে বিষয়টি মনিটরিং করব। তিনি বলেন, কোনো ব্যবসায়ী অবৈধভাবে দাম বাড়ালে সংশ্লিষ্ট
বণিক সমিতিকে সেই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা না করলে বাণিজ্য
মন্ত্রণালয় ঐ বণিক সমিতির লাইসেন্স বাতিল করবে। এক্ষেত্রে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে
সরকারকে সহযোগিতা করা হবে। জসিম উদ্দিন আরও বলেন, বাজার
স্থিতিশীলা রাখার জন্য ভোক্তাদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করা প্রয়োজন। চাহিদার তুলনায়
অতিরিক্ত পণ্য কিনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যাবে না।
এ সময় কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি কাজী আব্দুল হান্নান অভিযোগ করেন, সরকার বিভিন্ন নিত্যপণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার কারণে বাজার প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে না। অবৈধ মুনাফা রোধকল্পে বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করা জরুরি। এর জন্য নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর আহ্বান জানান তিনি।এ সময় এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য যা বৃদ্ধি পাওয়ার পেয়েছে। রমজানকে কেন্দ্র করে এই দাম যেন নতুন করে না বাড়ে। আমরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জেনেছি চিনি, ভোজ্য তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। পাইপলাইনেও (আমদানি পর্যায়ে) যথেষ্ট পণ্য রয়েছে। গত বছর ঈদের আগে বাজারে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছিল, এবার যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয়। ব্রয়লার মুরগি, গরুর মাংস এবং ডিমের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সরকার মাংস ও ডিম আমদানির চিন্তাও করতে পারে। এতে করে স্থানীয় শিল্প হুমকিতে পড়বে। এফবিসিসিআই সেটা চায় না বলেই সবাইকে নিয়ে মতবিনিময় সভায় বসেছে। এ সময় অসাধু ব্যবসায়ীদের দায় এফবিসিসিআই নিবে না বলেও সভায় জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।মত বিনিময় সভায় অংশ নিয়ে ভোজ্য তেল এবং চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানান, রমজানে চাহিদার বিপরীতে দেশে পণ্য দুটির পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। কারখানা পর্যায়ে জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে এসব পণ্যের কোনো ঘাটতি হবে না। এ সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ জানান, নিত্যপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাইকারি বাজার কিংবা মিলগেট থেকে রশিদ প্রদান না করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। আড়ত ও মিলগেটে পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে রশিদ বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি বাস্তবায়নে সরকারের সঙ্গে জোরালোভাবে কাজ করা হবে বলে জানায় এফবিসিসিআই।মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, এফবিসিসিআই-এর সহসভাপতি এম এম মোমেন, মো. আমিন হেলালী, পরিচালক এম জি আর নাসির মজুমদার, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, আবু হোসেন ভূঁইয়া রানু, আক্কাস মাহমুদ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিনসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ