মেহেরপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে থাই পেয়ারা। বাজারে পেয়ারা বিক্রি বেড়েছে
আমিরুল ইসলাম অল্ডাম/ KBDNEWS: মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি ঃমেহেরপুরে বাংলার আপেল খ্যাত পেয়ারা এখন মেহেরপুর জেলায় বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষ হচ্ছে।বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষ হওয়া এ পেয়ারাটি থাই জাতের। কৃষকদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে থাই পেয়ারা চাষ। বাজারে এখন সর্বত্রই পেয়ারা বিক্রি বেড়েছে।
মেহেরপুরের অনেকে থাই পেয়ারা চাষ করে এখন অনেকেই লাখপতি।জেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে থাই পেয়ারার বাগান।আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার বাগানগুলোতে শীতকালীন ফল এসেছে ভালো।
এ বছর লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করার আশা করছেন সব চাষীরা।অর্থকরী ফল এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর থাই পেয়ারার চাহিদা থাকায় এ পেয়ারার আবাদ দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে।
মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে থাই জাতের পেয়ারার বাগান করেছে মেহেরপুর জেলার চাষীরা।পেয়ারার চাহিদা থাকায় বিঘা প্রতি এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রির আশা তাদের।
এক বিঘা জমিতে থাই পেয়ারার আবাদ করতে উৎপাদন খরচ হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।মাত্র বছর সাত আগে মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের মাঠে পরীক্ষামূলক থাই পেয়ারার আবাদ শুরু করে পিরোজপুর গ্রামের ইসাহক আলী।
এ পেয়ারার পুষ্টিগুণ ও সুস্বাদু তার কারণে এবং মেহেরপুরের মাটিতে ভালো ফলন হওয়ায় লাভবান হয় ওই পেয়ারা চাষীরা।ব্যাপক লাভজনক হওয়ার কারণে জেলায় চলতি বছর কৃষি বিভাগের হিসেবে ২৫০বিঘা জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ থাই পেয়ারার আবাদ হয়েছে।
আগামী বছরগুলোতে পেয়ারার আবাদ আরও সম্প্রসারিত হবে বলে কৃষি বিভাগ মনে করছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা,সিলেট, চিটাগাং ও অন্য জেলায় এখন মেহেরপুরের থাই পেয়ারা বাজারজাত হচ্ছে।পেয়ারা চাষী ইসাহক আলী তার ২০বিঘা জমিতে থাই পেয়ারা থেকে ২০ লাখ টাকার বেচাকেনা হবে বলে আশা করছেন।
তিনি জানান, প্রতিবিঘা পেয়ারা চাষে প্রথম বছর ২০ হাজার টাকা খরচ হয়।পরবর্তী বছরগুলোতে যত্ম পরিচর্যা লেবার আর জৈব সার বাবদ বছরে ১০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।তবে এ পেয়ারা একটু বড় হওয়ার পর পলিথিন দিয়ে বেঁধে না দিলে পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়।এ আক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারলেই পেয়ারা চাষে সফলতা এবং অর্থ পাওয়া যাবে।
গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের হিন্দা গ্রামের আমিরুল ও দেবীপুর গ্রামের হেলাল জানান,মেহেরপুর জেলার পিরোজপুর গ্রামের ইসাহকের দেখা দেখি পেয়ারা চাষ করছে অনেক কৃষক।তিনিও ৫বছর ধরে ৭বিঘা জমিতে পেয়ারা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।তবে স্থানীয় বাজারে এ পেয়ারার দাম ভাল পাওয়া যাচ্ছে।এছাড়া ঢাকা, সিলেট, চিটাগাং জেলায় বাজারজাত করতে হয় এই পেয়ারা।ওইসব এলাকার বড় বড় ক্রেতারা এসে পেয়ারা কিনে নিয়ে যায়।
পেয়ারা বাগানের ভেতর সমন্বিতভাবে অন্য ফসল আবাদ করায় বেশি লাভবান হচ্ছেন চাষী।চাষীরা বলছেন,প্রথম বছরে পেয়ারা চাষের সঙ্গে পেঁয়াজ ও লাল শাক আবাদ করেছে, এবং খরচের টাকা তারা তুলে নিয়েছে।বিষমুক্ত পদ্ধতি অবলম্বনে মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দিচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ
জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খা জানান,মেহেরপুর জেলায় ১৮০ বিঘা জমিতে থাই পেয়ারার আবাদ আছে।এ বছর ফলন ভালো ও ব্যাপক চাহিদার কারণে অন্তত কোটি টাকার থাই পেয়ারার বেচাকেনা হবে।বাজারে প্রতি কেজি থাই পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।