হাজতিদের ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে আনা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী সমুন্নতে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ সোমবার (৩০ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশের আইজি, কারা মহাপরিদর্শক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের পুলিশ সুপার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার, কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং শরীয়তপুরের পালং থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাতকড়া আর ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা পড়লেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের রাজনৈতিক নেতা আলী আজম।
মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবরিয়াচালা এলাকায় জানাজায় উপস্থিত হন তিনি।
১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শরীয়তপুরে হাতে হাতকড়া আর পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নিলেন সেলিম রেজা নামে একটি ছাত্র সংগঠনের এক কেন্দ্রীয় নেতা। মায়ের মৃত্যুতে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেলেও জানাজার সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খোলা হয়নি।গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর ১০ ডিসেম্বর পল্টন থানার নাশকতার একটি মামলায় সেলিম রেজাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এই দুটি ঘটনা সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪ পরিবর্তন দরকার। এ কারণে জনস্বার্থে রিটটি দাখিল করি। প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন। রুলে প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪ ও জেল কোডের স্বেচ্ছাচারী এবং অযৌক্তিক ব্যবহার করে সাধারণ কয়েদিদের ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় গাজীপুর ও শরীয়তপুরের দুই ব্যক্তিকে অমানবিকভাবে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোয় কেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।