গাংনীতে নদী-খাল-বিল দখলের মহোৎসব ,, নদীগুলো যেন মরা খাল।খননের উদ্যোগ আর কতদিন...

ছবি: আমিরুল ইসলাম অল্ডাম 

আমিরুল ইসলাম অল্ডাম /Kamruzzaman khan  ঃ মেহেরপুরের গাংনীতে নদী-খাল-বিল জবরদখলের মহোৎসব শুরু হয়েছে।‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে,বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।পার হয়ে যায় গরু ,পার হয় গাড়ি, দুইধার উঁচু তার ঢালু তার পাড়ি’। এই কবিতার লাইনগুলির সাথে প্রকৃতির আর মিল খুঁজে পাওয়া যায়না। গাংনী উপজেলার বুক চিরে ছিল প্রবাহমান কাজলা নদী, ছেউটিয়া নদী ,উপজেলার কোল ঘেঁষে রয়েছে ঐতিহ্যবাহি মাথাভাঙ্গা ও ভৈরব নদী।এই  নদী নিয়ে কবি সাহিত্যিকরা কত গান ,কত কবিতা  লিখেছেন।কালের বিবর্তনে এসব নদী এখন মরা খালে রুপান্তরিত হয়ে গেছে। নদী বাঁচাও, খাল বাঁচাও এই শ্লোগান কি শুধু কাগজেই থাকবে ; না নদী খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে! দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি ,এসব নদী দখলমুক্ত করে খনন করা হবে। কিন্তু কবে ? এর সদোত্তর  আজও পাওয়া যায়নি। 

                                         
ছবি: আমিরুল ইসলাম অল্ডাম 

এই কাজলা নদী দিয়েই নৌকাযোগে এসে এক সময় ইংরেজ বেনিয়ারা ব্যবসা করতে উপজেলার ভাটপাড়া (সাহারবাটি) গ্রামের কোল ঘেষে কুঠিবাড়ি স্থাপন করেছিল। সেই নদী এখন শুধুই স্মৃতি। তেরাইল, ভরাট, দুর্লভপুর, ভোমরদহ বিলপাড়া, হিন্দা, কুলবাড়ীয়া, নওপাড়া, ভাটপাড়া ,সাহারবাটি, শ্যামপুর, মীরপাড়া, গাড়াডোব, আলমপুর, খোকসা গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই নদীর পাড় আবাদী  জমি দেখিয়ে অসাধু তহসীলদারদের নিকট থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে পুকুর কেটে মাছ করে আসছে।ফলে এই নদীগুলোর পানি প্রবাহ বর্তমানে বাধাগ্রস্ত। সরেজমিনে ঘরে দেখা গেছে, নদীর দুপাড়ে বড় বড় পুকুর কেটে জবরদখল করে নিয়েছে। নদীর মাঝখানে কোন কোন জায়গায় মাত্র ১০-১২ ফুট চওড়া জায়গা রয়েছ্।ে যে কারনে বর্ষাকালে মাঠ-ঘাট ডুবে ফসল নষ্ট  হয়ে যায়। পানি নিষ্ক্শানের পথ থাকে না।অন্যদিকে ঠিকমতো পানি না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে আবাদী জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হয় না। নদী খাল বিলে নাব্যতা না থাকায় পানি থাকেনা। ফলে দেশীয় মাছ পুটি,খলিসা, কৈ,শোল, টাকি, শিংমাছ, মাগুড়,ভ্যাদা ইত্যাদি  মাছ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নদী পাড়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলো। এসব নদী খাল দখল নিয়ে প্রভাবশালীরা মাছ চাষ করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। 

ছবি: আমিরুল ইসলাম অল্ডাম 

এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম জানান, নদী মাতৃক বাংলাদেশের অংশ এই গাংনী উপজেলা। শস্য-শ্যামলা উর্বর ভূমি বেষ্টিত এই জনপদ। এই উপজেলার রয়েছে অতীত ঐতিহ্য। বিভিন্ন শাক সবজি সহ খাদ্যে উদ্বৃত্ত উপজেলার মধ্যে রয়েছে কাজলা ,ছেউটিয়া, ভৈরব নদী । দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছে,এই নদীগুলো দখলমুক্ত ও খনন করার জন্য ইতোমধ্যেই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছ্।ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নদী খননে টেন্ডার হয়ে গেছে। অবিলম্বে খাল দখলমুক্ত ও খনন কার্য শুরু করা হবে। এই নদী গুলো খনন হলে কৃষকদের  সেচ সুবিধা বাড়বে, দেশীয় মাছের চাহিদা পূরণ হবে। এছাড়া ভাটপাড়া (নীল কুঠি) বর্তমানে ডিসি ইকো পার্ক থেকে আমঝুপি নীল  কুঠি পর্যন্ত নৌপথে পর্যটকরা  যাতায়াতের সুবিধা  পাবে। 

ছবি: আমিরুল ইসলাম অল্ডাম 
এনিয়ে  মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের নবনির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন জানান, আমি সংসদ সদস্য হওয়ার পূর্বে থেকেই নদীগুলো দখলমুক্ত করে খননের দাবি জানিয়ে আসছি। আমি গাংনীবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, অবিলম্বে নদী গুলো খননের কাজ শুরু হবে।আমি সুন্দর গাংনী  বিনির্মাণে আপনাদের সহযোগিতা চাই। 

  




Post a Comment

Previous Post Next Post