আমিরুল ইসলাম অল্ডাম ঃ গাংনীর পল্লীকবিখ্যাত ছহিরউদ্দীন (৮৫)আর নেই।সাথী হারা কবি নিরবে চলে গেল না ফেরার দেশে। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কাথুলী ইউনিয়নের মাইলমারী গ্রামের কৃতি সন্তান পল্লী কবি ছহিরউদ্দীন ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজেউন) ।
শনিবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৬ টার সময় তিনি বার্ধক্য জনিত কারনে নিজ বাড়ি মাইলমারী গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন।পারিবাবিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার কবি পত্মী (সহধর্মিনী) টুনুয়ারা বেগম মারা গেছেন। কবি ছহিরউদ্দীন ও তার স্ত্রী কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।রোগে এবং বার্ধক্যজনিত কারনে তারা দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেলেন। এমনটি জানিয়েছেন তার নিকটাত্মীয়রা।পল্লী কবি ছহিরউদ্দীনের মেঝো ছেলে মিনারুল ইসলাম জানান, মা মারা যাবার পর বাবা ভীষন ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মায়ের শোকেই আমাদের বাবা মারা গেলেন। মৃত্যুকালে তিনি তার ৬ ছেরে ৪ মেয়ে মোট ১০ সন্তান সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩ টার সময় মাইলমারী গ্রামে কবির জানাযা শেষে স্থানীয় গোরস্থান ময়দানে তার স্ত্রীর কবরের পাশে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।পল্লীকবি ছহিরউদ্দীনের মুত্যুর খবর পেয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম গভীর ভাবে শোকাহত হয়েছেন। তিনি তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, তিনি একজন ভাল মানুষ ছিলেন। মেধা , মনন, ও সৃষ্টিশীলতায় তিনি ছিলেন ক্ষণজন্মা পুরুষ। তার মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও পরিবারের সকল সদস্যদের ধৈর্য্য ধারণ করার জন্য দোয়া করেন। গুনী মানুষের স্বীকৃকিস্বরুপ গাংনী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনায় কুলখানি ও দোয়া মাহফিল করতে নগদ ১০ হাজার টাকা তার সন্তানদের হাতে প্রতিনিধির মাধ্যমে তুলে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গতঃ পল্লী কবি ছহিরউদ্দীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প , ছড়া, কবিতা, গান ও উপন্যাস লিখেছেন। মাইলমারী পদ্মবিল সহ এলাকার বিভিন্ন গ্রামের জীবন চিত্র যেমন নীলকরদেও নির্যাতনের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে থাকা নীল কুঠি, কাজলা নদী ইত্যাদি তুলে ধরে কয়েকশ’. কবিতা, গান , গল্প লিখেছেন। তার অনন্য অবদান ছোট গল্প উপন্যাস ‘ নিঝুম রাতের কান্না’ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া অপ্রকাশিত একাধিক বইয়ের পান্ডুলিপি রয়েছে। অর্থের অভাবে বেশ কিছু উপন্যাস ছাপার অপেক্ষায় রয়েছে। তার শেষ ইচ্ছা ছিল বইগুলি প্রকাশের । তার আগেই তিনি পুথিনীর মায়া ত্যাগ করে চির বিদায় নিতে হয়েছে। পল্লী কবির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্ােক জানিয়েছেন।