আমিরুল ইসলাম অল্ডাম ঃমেহেরপুরের গাংনীতে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (কর্মসৃজন) পর্যায়ের অনুমোদিত প্রকল্প সমূহের রাস্তায় মাটি কাটা,স্কুল, ঈদগাহ,গোরস্থান কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস ও পিআইসিদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগির চুক্তি করে কাগজে কলমে মাষ্টার রোল করে এই প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করলেও কেউ দেখার নেয়। ফলে উপজেলায় গৃহীত প্রকল্পে কর্মসংস্থান কর্মসূচির অর্থ লুটপাট হচ্ছে।প্রতিটা প্রকল্প থেকে কমপক্ষে ৫ জন করে শ্রমিকের টাকা অফিস কেটে নিচ্ছে বলে জানা গেছে। উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান, মেম্বর ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ম্যানেজ করে পিআইসি(প্রকল্প চেয়ারম্যানরা) লক্ষ লক্ষ টাকা ভাগাভাগি করার মত দুর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিগত মে মাসের ২য় সপ্তাহ থেকে গাংনী উপজেলায় ৯ ইউনিয়নে ৪৫ টি প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও বেশীর ভাগ প্রকল্পে সন্তোষজনক শ্রমিকের দেখা মেলেনি।এবার ৯ টি ইউনিয়নের ৪৫ টি প্রকল্পের জন্য ২ হাজার ৬৩১ জন লেবার তালিকাভুক্ত করা হয়েছ্।ে উপজেলায় অতিদরিদ্রদের জন্য নেয়া কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে দলীয় বিবেচনায় শ্রমিকদের নামের তালিকা করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পূর্ব তালিকার প্রকৃত হতদরিদ্র শ্রমিকদের নাম বাদ দিয়ে পিআইসিগণ স্বজনপ্রীতি ও আতœীয়করণের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে নিজেদের অনুগত বিত্তবান লোকজনকে শ্রমিকদের তালিকাভুক্ত করেছেন।ক্ষমতাসীন দলের গ্রাম ও ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি-সম্পাদকদের নাম রয়েছে এই তালিকায়। শ্রমিকদের নাম পরিবর্তন করার নিয়ম না থাকলেও ১ম পর্যায়ের তালিকাভুক্ত অনেক অসহায় শ্রমিকদের নাম বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে অনেক নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সরেজমিনে সাহারবাটি ইউপির ২ টি প্রকল্প ঘুরে স্থানীয় লোকজন ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে ।সাহারবাটি কেশবনগর কালিঘাট ব্রীজ হতে আব্দুল ওয়াদুদের জমি মুখী রাস্তা মেরামত প্রকল্পে ৫১ জন শ্রমিকের বিপরীতে উপস্থিত পাওয়া গেছে মাত্র ৩৮ জন, অন্যদিকে ভাটপাড়া ইকোপার্কের মাটি দ্বারা মেরামত প্রকল্পে ৪৫ জনের বিপরীতে উপস্থিত ৩৫ জন। প্রকল্পের পিআইসি ফেরদৌসী খাতুন ও নজরুল ইসলাম মেম্বর জানান, ৫/৭ জন কম রয়েছে। আপনারা সবইতো জানেন। পরে আপনাদের সাথে দেখা করবো।
জুগীরগোফা আজিজুর মাষ্টারের বাড়ি হতে দাসপাড়ামুখী রাস্তা ও রুহুল আমিনের বাড়ি মাঠ মুখি রাস্তা মেরামত প্রকল্পের ষোলটাকা ইউপির ছানোয়ার হোসেন মেম্বর জানান, আমাদের লেবার সব ঠিক আছে। ৫০ জন লেবারের মধ্যে ৩৭ জন লেবার পাওয়া গেছে। একই ভাবে চোখতোলা পাকা রাস্তা হতে শ্মশানঘাট ভায়া চেংগাড়া মোড় মুখি রাস্তা মেরামত প্রকল্পের পিআইসি ইদ্রিস আলী মেম্বরের প্রকল্পে ৫৩ জনের জায়গায় লেবার পাওয়া গেছে ৪৩ জন। মেম্বর আরও জানান, আমার ৫৩ জন লেবারের মধ্যে অফিসে দিতে হয়, চেয়ারম্যানের ২ জন, স্থানীয় নেতাদের ২ জন এবং অফিসে ফাইলিং এর জন্য এমনকি কয়েকজন সাংবাদিকদের টাকা দিতে হয়।
ইাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন লেবার জানান,আমরা নিয়মিত কাজ করলেও মেম্বর আমাদের ৪ শ’ টাকার স্থলে মাত্র ৩শ’ টাকা দেয়। বাদবাকী টাকা দেবেনা বলে জানিয়েছে।এছাড়া কার্ড মেম্বররা তাদের নিজের কাছে রেখে মনগড়া হাজিরা করছেন।আরও জানা গেছে , চেয়ারম্যান ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সুপারিশে প্রতিটা প্রকল্পে ৫ থেকে ১০ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যারা কখনই কাজে হাজিরা দেন না।তালিকায় নাম থাকার কারনে নগদ ্একাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার নিরঞ্জন চক্রবর্তী জানান, মেম্বরদের অভিযোগ সত্য নয়। পিআইসিদের সাথে টাকা উৎকোচ হিসাবে গ্রহন করা হয় না । অনুপস্থিত লেবারের টাকা দেয়া হবে না।