সুনামগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত হাওর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার চন্দ্রসোনার থাল হাওরে ছবি: Kbdnews
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেছেন, হাওরের ফসল রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে হাওরে ফসলের ঝুঁকি কমে আসবে। বারবার কৃষকের ফসল তালিয়ে যাবে না। এর পাশাপাশি এবার হাওরে বাঁধ নির্মাণে কারও অনিয়ম বা গাফিলতি থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জে হাওরের পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি ধর্মপাশা উপজেলার ভেঙে যাওয়া চন্দ্রসোনার থাল হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
পানিসম্পদ
উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা দেওয়ার
উদ্যোগ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, হাওরে যেসব বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো
সংস্কারের কাজ চলছে। সবাই মাঠে আছেন, কাজ করছেন। একই সঙ্গে যেসব কৃষক ফসল
হারিয়েছেন, তাঁদের তালিকা করে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
পাহাড়ি
ঢলে হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত ফসল রক্ষা বাঁধ পরিদর্শনকালে উপমন্ত্রীর সঙ্গে সুনামগঞ্জ-১
আসনের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন, সুনামগঞ্জ ও সিলেট সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদ শামীমা
আক্তার খানম, জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উপমন্ত্রী
সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি ও
পেশার লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।এক সপ্তাহ ধরে ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জি থেকে সুনামগঞ্জে ব্যাপক পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে জেলার নদ-নদী ও হাওরের পানি। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জেলার সব হাওরের ফসল। একের পর এক হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। মানুষজন দিনরাত বাঁধে অবস্থান করে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন।
গত শনিবার প্রথমে বাঁধ ভেঙে তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের ফসল তলিয়ে যায়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে বাঁধ ভেঙে ফসলহানি ঘটে চাপতির হাওরে। ঢল নামছে, বাড়ছে জেলার নদ-নদীর পানি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন। বুধবার পর্যন্ত জেলায় নয়টি হাওরের ৬৪৪ হেক্টর জমির ধান তলিয়েছে। এই হিসাবে চাপতির হাওর আসেনি। তবে হাওর আন্দোলনের নেতারা বলছেন, চাপতির হাওরসহ জেলায় এ পর্যন্ত আট হাজার হেক্টরের মতো ফসল তলিয়েছে।পানি উন্নয়ন
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার হাওরে ৭২৭টি প্রকল্পের অধীনে ১২২ কোটি টাকার ফসল
রক্ষা বাঁধের কাজ হয়েছে। এই বাঁধ নির্মাণকাজের সময়সীমা ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮
ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছিল।