মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি :মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নাম ভাঙ্গিয়ে গাংনীর বেশ কয়েকটি হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকদের কাছে মোবাইল ফোনে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করেছে প্রতারক চক্র।
এর সাথে গাংনী উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান সরাসরি জড়িত বলে অভিমত দেন ব্যবসায়ীরা।
গাংনী বাজার হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি আমিন মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক রাশেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দীন গাংনী সুইটস এর মালিক শাজাহান আলী জানান, আজ সোমবার ১১ টার দিকে গাংনী স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান আমাদের কাছে গিয়ে তার নিজস্ব মোবাইল হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) র সাথে কথা বলেন। ফোনটি ধরার সাথে সাথে সহকারী কমিশনার ভূমি পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনার মোবাইল নং দেন।
আমাদের মোবাইল নং তাকে দেওয়ার পর প্রতারক ০১৯২৩-৮৯১৬১৭ এবং ০১৯৩৩-২১২১২০ দুটি মোবাইল নং থেকে হোটেল রেস্তোরাঁর মালিক গাংনী আমিন মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক রাশেদুল ইসলামের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা, আব্দুল মালেক মিষ্টান্ন এন্ড ফল ভান্ডারের মালিক আব্দুল মালেকের কাছে ৫০ হাজার টাকা, গাংনী সুইটস এর মালিক শাজাহান আলীর কাছে ৪০ হাজার টাকা, সোবহান হোটেলের মালিকের কাছেসহ অন্যান্য হোটেল মালিকদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। ওই প্রতারক আমাদের বলে, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতে ভ্রাম্যমান আদালতে বের হচ্ছি। আপনার দোকান খোলা রাখতে হলে টাকা বিকাশে দিয়ে দেন। বিকাশের দোকানে গিয়ে কল দেবেন। পরে কল দিলে সে কারো কাছ থেকে ৩০ ও কারোর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন। তার দাবীকৃত টাকা না দিলে এসব হোটেল রেস্তোরাঁগুলো আগামী ৬ মাসের জন্য বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও হুমকী দেই ওই প্রতারক।
হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দীন জানান, ঘটনাটি আমার কাছে সন্দেহের সৃষ্টি হলে সাথে সাথে আমি গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল আলমের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি বিষয়টি কিছুই জানেননা এবং মোবাইল নং দুটি তার নয় বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে র্যাাব-৬ গাংনী ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগ করেন এবং ব্যবসায়ীদের আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা স্যানেটারী পরিদর্শক মশিউর রহমান জানান, আমি বøাক মেইলের শিকার। আমাকে সহকারী কমিশনার স্যার পরিচয় দিয়ে দ্রুত হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকদের সাথে কথা বলিয়ে দেওয়ার জন্য বলেন। আমি তখন তাদের কাছে গিয়ে আমার মোবাইল ফোন থেকে কথা বলিয়ে দিই। আমি স্যারের নির্দেশ পালনের জন্যই তাদের কাছে গেছি।
সহকারী কমিশনারের বিকাশ নং এ ঘুঁষ দিতে হবে, না হলে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে তাদের দোকান বন্ধ করে দেবেন, এটা নিয়মের মধ্যে আছে কিনা। তাছাড়া অপরিচিত মোবাইল নং দেখার পরেও হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকদের সাথে আপনার ফোন থেকে কথা বলিয়ে দিলেন কেনো? এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি তার কাছ থেকে।
তবে নিজের দোষ ঢাকতে ওই দুটি মোবাইল নং এর অজ্ঞাত মালিকের নামে গাংনী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন স্যানেটারী ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান।যার জিডি নং ১৫০, তাং ০৪-০৪-২২ ইং
এব্যাপারে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, স্যানেটারী পরিদর্শক একজন সরকারী কর্মকর্তা। সরাসরি তার নামে মামলার বিধান নেই। তাই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হতে পারে।