মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরের গাংনীতে চলতি মৌসুমে রাজাসান,সুপারম্যান, এটলাস-৭০, এটোম কেকে ক্রস, টফিক সান,সুপার সান,গ্রীণ বল নামধারী জাতের বাধাঁকপি চাষ করে অনেক চাষী লাভবান হয়েছে। একইভাবে নিনজা, হোয়াইট বল,একটেল ও বিগসট জাতের ফুল কপির চাষ করা হয়েছে। শীত মৌসুমে বাঁধাঁ ও ফুল কপি চাষ করে শত শত কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে কপি চাষ। কিন্তু চলতি শীত মৌসূমের আগে গরমকালে কপির লিফ বাইট বা পাতা ঝলসানো রোগ দেখা দেওয়ায় কিছু কিছু চাষি ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে কৃষকরা জানান।
গাংনী উপজেলার সাহারবাটি মটমুড়া,হোগলবাড়ি,যুগিন্দা,গাড়াডোব,বাগুন্দী গ্রামের কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় কপি চাষ করেছে। সাহারবাটি গ্রামে ব্যাপক হারে এ কপি চাষ হয়ে থাকে। প্রতিদিন সবজিখ্যাত সাহারবাটী ও আশে পাশের গ্রাম থেকে ১৫ থেকে ২০ ট্রাক কপি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। এক সময় এই মাঠে বালুময় জমিতে ধান-পাট ছাড়া অন্য ফসলের চাষ তেমন একটা হতো না। প্রায় ৩০ বছর আগে এ গ্রামে কপি চাষ শুরু হয়। লাভজনক আবাদ হিসেবে কপি চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠে এলাকার কৃষকেরা। এছাড়াও কপি চাষ সাহারবাটি গ্রাম থেকে বর্তমানে ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এ চাষের মাধ্যমে কৃষকেরা বেশ লাভবানও হচ্ছে। এখানকার উৎপাদিত কপি জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানি ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে এ বছর এ উপজেলায় বাঁধা কপির চাষ হয়েছে ৪৫০ হেক্টর ও ফুল কপির চাষ হয়েছে প্রায় ১৯০ হেক্টর জমিতে ।
শীতকালিন কপি চাষী আমিনুল ইসলাম ও আমিরুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে কপির চাষ করেছেন। এ চাষে তার বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা, বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকায়। বিঘা প্রতি জমিতে ৪৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।
সাহারবাটি গ্রামের কপি চাষি সোহেল জানান, তিনি এবার ৮ বিঘা জমিতে এটোম টফিক সান জাতের কফি চাষ করেছেন। তিনি আশা করেন বাজার দর ভাল হলে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা লাভ হবে ।
গাড়াডোব গ্রামের কপি চাষি তৈয়ব,যুগিন্দা গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, এবার আমাদের ৪বিঘা করে কপি রয়েছে। জমিতে এটলাস-৭০, ট্রফিকসান জাতের কপি চাষ করেছেন এবার বাজার দর ভাল হলে লাভবান হওয়ার আশা তাদের। এখানকার কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যয়ের কর্মকর্তাদের পরমর্শে বছরে তিন মৌসুমে কপি চাষ করছে চাষীরা । কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ কপি চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা ।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা লাভলী খাতুন জানান,চাষীরা বর্তমানে বছরে তিনটি মৌসুমে ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করছে।মৌসুমে কিছুটা পোকা মাকড়ের উপদ্রব বেশী হয়।শীতকালীন আবাদে পোকামাকড় কম থাকে। গাংনীর কৃষকদের এমন আবাদ দেখে পার্শ্ববর্তী জেলার কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে কৃষিতে বিপ্ল¬ব ঘটেছে বলে তিনি মনে করেন।