Kbdnewsডেস্ক: পানিশূন্য হয়ে পড়ছে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক অঞ্চল। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া এবং চাহিদা বেশি হওয়ায় অঞ্চলটির অনেক দেশের নদী, হরদ ও জলাভূমি শুকিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে পানি নিয়েই মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে সংবাদমাধ্যমটি।
দুই দশক আগেও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই ছিল দৃষ্টিনন্দন লেক। যেখানে পর্যটকদের আনাগোনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এমনকি লেক ঘিরে তৈরি হয়েছিল নানা ব্যবসা-বাণিজ্য। কিন্তু বর্তমানে অঞ্চলটির বেশির ভাগ লেক পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। পানি শুকিয়ে যাওয়ায় অনেক জায়গায় নৌযান আটকা পড়ে আছে। শুধু লেক নয় তীব্র খড়ার কারণে একই অবস্থা হরুদ ও জলাশয়েও। মধ্যপ্রাচ্যের পানি সংকট নিয়ে রোববার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। এতে বলা হয়, ইরান, ইরাক, জর্ডানসহ ওই অঞ্চলের কয়েকটি দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তীব্র পানি সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একদিকে তাপমাত্রা বাড়ছে, অন্যদিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসায় এই সংকট তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। একইসঙ্গে কৃষি কাজের জন্য ভূগর্ভ থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি উত্তোলন করায় পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে শুকিয়ে যাচ্ছে নদী-নালা।
জর্ডানের জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির এক গবেষণায় দেখা গেছে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ জর্ডানের নাগরিকদের জনপ্রতি পানি ব্যবহারের পরিমাণ ৫০ শতাংশ কমাতে হবে। ওই পানি দিয়েই তাদের গোসল, ধোয়ামোছা ও পান করার কাজ চালাতে হবে। এদিকে ইরানে পানির অভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। জুলাইতে এক সপ্তাহের মধ্যে নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন আন্দোলনকারী নিহত হন।
তারা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে পানির সংকট নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। ইরানের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশটি গত পাঁচ দশকের মধ্যে শুষ্কতম সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ মাসের শুরুর দিকে প্রকাশিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেলের প্রতিবেদনে দেওয়া পূর্বাভাষ থেকে জানা গেছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের শীতকাল আরও শুষ্ক হবে, গ্রীষ্মকাল আরও আর্দ্র হবে এবং উচ্চ গরম বৃষ্টির পানি শুকিয়ে দেবে। সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অঞ্চলটিতে পানি সংকট আগামীতে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
বসবাসের অযোগ্য হতে পারে অনেক এলাকা। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যে যে উত্তেজনা চলছে, পানির জন্য তা আরও অবনতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে।