খুলনা ব্যুরো- করোনা পরিস্থিতির কারণে পবিত্র আশুরায় তাজিয়া মিছিল না হলেও খুলনার ইমাম বাড়ীতে মাতম অনুষ্ঠিত হয়েছে। হযরত ইমাম হোসাইন (আঃ) এর পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আজ শুক্রবার (২০ আগস্ট) নগরীর আলতাপোল লেনস্থ আঞ্জুমান-এ-পাঞ্জাতানী ইমাম বাড়িতে সংক্ষিপ্তকারে শোক কর্মসূচী পালিত হয়। বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা পরিস্থিতির কারণে শোক মিছিলের আয়োজন করা হয়নি। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল আলোচনা সভা এবং শোক ও মাতম।
ইমাম বাড়িতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খলিল রাজাভী।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, শহীদ সম্রাট ইমাম হুসাইন (আ) এমন এক বিশাল ব্যক্তিত্বের নাম যে কোনো নির্দিষ্ট স্থান, কাল বা পাত্রের সাধ্য নেই তাঁকে ধারণ করার। আশুরার ঘটনার পর কয়েক শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও এই বিপ্লব কোনো ভৌগোলিক, জাতীয়তা বা কালের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি। বরং ইতিহাস জুড়ে তিনি সূরে্যর মতো সমগ্র বিশ্বকে উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত করার উৎস হয়ে ছিলেন।
নবী (সাঃ) দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেনের (আ) পবিত্র শাহাদাতকে স্মরণ করা একটি ধর্মীয় দায়িত্ব। কেননা ইমাম হোসাইন (আঃ) ইসলাম ধর্ম রক্ষার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। সুতরাং ইমাম হোসাইন (আঃ) এর এই কালজয়ী বিপ্লবকে স্মরণ করে আলোচনা অনুষ্ঠান ও শোক মিছিলের আয়োজন করে জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বলে মনে করি।
দশই মহররমের দিবাগত রাত বা শামে গাঁরিবা তথা অসহায় মুসাফিরদের রাত। এ রাত বিশ্ব ইতিহাসে তথা মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে শোকের রাত। কারণ এরাতের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে শহীদ হয়েছেন শহীদ সম্রাট ইমাম হুসাইন (আঃ) ও তাঁর প্রায় ৭২ থেকে ১০০ জন সঙ্গী কারবালার উত্তপ্ত মরুভূমিতে তৃষ্ণার্ত অবস্থায়। তাঁদের মধ্যে প্রায় ২০ বা ২২ জন ছিলেন নবী-পরিবারের সদস্য। ছিল ইমামের ৬ মাস বয়সী দুধের শিশু আলী আসগর। ছিল ১৩ বছরের ভাতিজা কাসেম। ছিল ইমামের ২০-২২ বছর বয়স্ক পুত্র
হযরত আলী আকবর যিনি ছিলেন দেখতে অবিকল মহানবীর মত! ছিলেন ইমামের সৎভাই সৌন্দর্য ও বীরত্বের জন্য খ্যাত হযরত আবুল ফজল আব্বাস। আরও ছিলেন মহানবীর ৭৫ বছর বয়স্ক সাহাবি হাবিব ইবনে মাজাহের। ছিলেন ইয়াজিদ বাহিনী ছেড়ে আসা ওই বাহিনীর অন্যতম বড় সেনাপতি হোর।
আলোচনা শেষে ইমামবাড়ী প্রাঙ্গণে মাতম অনুষ্ঠিত হয়।