বিএম রাকিব হাসান, খুলনা ব্যুরো-: খুলনার রুপসায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় অবৈধ কয়লার চুল্লি বন্ধ হওয়ায় হাজারো শ্রমিক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। হঠাৎই কর্মহীন শ্রমজীবীর সংখ্যা বাড়ছে রুপসায়। বেকারত্বের তালিকায় যোগ হতে চলেছে প্রায় ৮ হাজার শ্রমজীবী। আকস্মিক এমন বেকারত্ব রুপসার অর্থনীতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ব্যাখ্যা রয়েছে অর্থনীতি বিশ্লেষণে।
জানা গেছে, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারখানা অনিয়মে পরিচালিত হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে কয়লা তৈরির চুল্লি। এতে কর্মহীন হয়ে পড়ছেন শ্রমিকরা।
এসব কয়লা তৈরির চুল্লি সরকারি নীতিমালার বাইরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন না থাকার দায়ে চুল্লি ধ্বংস করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সম্প্রতি গেল ২মার্চ অবৈধ কয়লা কারখানার চুল্লির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। এই ধাক্কায় কয়লা কারখানা ছেড়ে পালিয়েছেন অনেক কয়লা কারখানার মালিক। অনেকেই আবার সাধুবাদ জানিয়েছেন সরকারের এই উদ্যোগকে।
খবর সংগ্রহে জানা গেছে, একেকটি কয়লা কারখানার চুল্লির অভ্যন্তরীণ ও সংযোগ সুত্রে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা গড়ে ৫০ জন। যার মধ্যে সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালতের সিদ্ধান্তে স্থাপনা ধ্বংসে পড়ে ২৬ কয়লা কারখানার প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক রীতিমতো কাজের অনিশ্চয়তায়। গণমাধ্যমের সাথে কথা বলা কয়লা কারখানার শ্রমিকদের জীবিকার বয়স কারোর যুগ, আর কারোর বছরের পর বছর। কেউবা কাজ করেন পুরুষ পরম্পরায়।
এ বিষয়ে চুল্লি মালিক শ্রিফলতলার সাবেক ইউপি সদস্য শাহাবউদ্দিন হালদার বলেন, ২৬টি কাঠের চুল্লি ভেঙে দেওয়ায় প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ও সাড়ে তিন থেকে চার হাজার শ্রমিক বেকার জীবনযাপন করছে। এদের ব্যথায় ব্যথিত হয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় এর কাছে আকুল আবেদন যে রুপসায় যে বেকারত্ব ও হাহাকার দেখে তাহলে প্রকৃত পক্ষে এই কাঠের চুল্লিকে যে কোন শর্তে চুল্লির মালিক এবং শ্রমিকরা সব রকমের শর্ত মেনে নিয়ে বৈধতা এবং লাইসেন্স চাই। আমিও এদের সাথে একমত পোষণ করে বলতে চাই যেহেতু দুঃখি জনগণের পাশে জননেত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক আছে এখনো থাকবে এই আশায় আশায় আশান্বিতা হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মাননীয় মন্ত্রীর কাছে বিনীত নিবেদন আপনারা এদের প্রতি সদয় হোন।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাশরুবা ফেরদৌস বলেন, এই চুলা গুলো সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং তারা কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করছে। কাঠ পুড়ানোর ফলে একদিকে যেমন বায়ু দূষণ হচ্ছে তেমনি আমাদের দেশে নির্বিচারে গাছ নিধন হচ্ছে। এই গাছ নিধনের প্রতিক্রিয়া কিন্তু আমরা অলরেডি পাচ্ছি যে আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন বিভিন্ন ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটছে। আর পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী এই ধরনের কার্যক্রমকে বৈধতা দেওয়ার কোন ধরনেরই সুযোগ নেই। আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে যে চারটি ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স দেওয়া হয় সবুজ, কমলা(ক), কমলা(খ), লাল। এই চারটা ক্যাটাগরির কোন ক্যাটাগরিতে তারা পড়ে না। এবং এই কার্যক্রমটি সম্পূর্ণ ভাবে অবৈধ বলে তাদের কোন ধরনের বৈধতা দেওয়ার সুযোগ নাই।