ছবি: বি এম রাকিব হাসান,
বি এম রাকিব হাসান, খুলনা: পাট সিন্ডিকেট এর কারণে অস্বাভাবিক মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বন্ধ হওয়ার পথে খুলনার বেসরকারি জুট মিলগুলো। ইতোমধ্যে উৎপাদন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি জুটমিল। তবে, এ সব মিলের কেনা পাট শেষ হয়ে গেলে নতুন করে আর কিনবেন না বলে জানিয়েছেন মালিকরা। বন্ধ রাখবেন তাদের পাটজাত পণ্যের উৎপাদনও।
খুলনায় সরকারি জুট মিলগুলি একযোগে বন্ধ হয় গত বছরের ২ জুলাই, আর ১৫টি ছোট বড় জুট মিল ব্যক্তি মালিকানায় রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি চালু রয়েছে। পাট সংকটের কারণে অধিকাংশ জুট মিল বন্ধের পথে। এই মিলগুলোতে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করেন। পাটের অত্যাধিক মূল্য এবং সংকটের কারণে মিলগুলো বন্ধ হয়ে গেলে কর্মহীন হয়ে পড়বেন জুটমিলের শ্রমিকরা। মৌসুম শেষে পাট নেই। তাই দামও বেশি। ভরা মৌসুমে পাটের মণ দাম ছিল ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। তবে, নভেম্বর মাসের শেষ থেকে পাটের দাম ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার পর্যনত্ম বাড়ে। এরপর জানুয়ারির প্রথম থেকে পাট ৩ হাজার ৫০০ টাকা হলেও বর্তমান বাজারে পাট বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকায়। অথচ গত বছর এরকম সময় উন্নত মানের পাটের দাম ছিল সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা।
শিরোমনি বাইপাস এলাকায় অবসি’ত এফ আর জুট মিলস লিমিটেডের ব্যবস’াপনা পরিচালক মোঃ শরিফ ফায়কুজ্জামান মিলন বলেন, ‘পাটের সংকট ও কাঁচামালের দাম বেশি হওয়ায় প্রতিষ্ঠান প্রায় বন্ধের পথে। আমার এখানে ৬০০ শ্রমিক কাজ করতেন। বর্তমানে ২০০ শ্রমিককে দিয়ে স্বল্প পরিসরে কাজ চলছে শুধুমাত্র টিকে থাকার জন্য । তবে পাটের দাম বেশি হওয়ায় এবার রপ্তানি চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান বাজারে পাটের দাম ৪ হাজারেরও বেশি। দেখা যাচ্ছে একটি পণ্যের দাম যেখানে ১০ টাকা, সেখানে কাঁচা মালের দাম পড়ছে ২০ টাকা। পাটের দাম বেশি হওয়ায় আগে যে পাট কিনেছি, সেগুলো দিয়ে পণ্য তৈরি করছি। এই পাট শেষ হয়ে গেলে আর পাট কিনবো না। মিড়েরডাঙ্গা শিল্প এলাকার আশিংকচালুকৃত সোনালি জুট মিলটি কিছুদিন আগে বন্দ হয়ে যায় । মিলটির সাবেক সিবিএ সাধারন সম্পাদক শেখ আমজাদ হোসেন বলেন বিভিন্ন মালিক মিল চালানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলেও বর্তমান বাজারে পাটের দাম বৃদ্ধি হওয়াতে কেউ মিল চালাতে চাইছেনা। পাটের দাম কমা মাত্র মিলটি উৎপাদনে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন ।