করোনা ভাইরাসের প্রতীকি ছবি।
Kjkhan :করোনা মহামারি দেখা দেওয়ার পর এবারই যে প্রথম রূপান্তর বা জিনগত পরিবর্তনের কারণে ভাইরাসটির সংক্রমণ বেড়েছে, তা নয়। তবে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের পর বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এবারের ছড়িয়ে পড়ার হার ৭০ শতাংশ কিংবা তার চেয়েও বেশি। এই নিউ স্ট্রেইন বা নতুন ধরনের ভাইরাস প্রতিরোধে ব্রিটেনের বিভিন্ন অংশে টিয়ার-ফোর বিধিনিষেধ আরোপ করে লোকজনকে ঘরে থাকার নির্দেশ জারি করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
লন্ডন ও দক্ষিণপূর্ব ইংল্যান্ডে নতুন ধরনের এই ভাইরাসের লক্ষ্য করা গেছে। লন্ডনের ৬২ শতাংশ সংক্রমণই নতুন ধরনের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে,এই নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস এখন কয়েকটি দেশে পাওয়া গেছে। এই ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় বিস্তার ঠেকাতে আন্ত:দেশীয় বহু ফ্লাইট চলাচল পুনরায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সকল ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপসহ ৩০ টি দেশ।
ইউরোপ হতে বিচ্ছিন্ন ব্রিটেন। ক্রিসমাসের মাত্র এক সপ্তাহ আগে কেবল ফ্লাইট নয়,ইউরোপের যেসব দেশের সাথে যুক্তরাজ্যের সড়ক,সমুদ্র ও রেল চলাচল চালু ছিল তাও স্থগিত করা হয়েছে। যোগাযোগ ছাড়াও যুক্তরাজ্যের ওপর নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। সৌদি আরব সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।
সৌদি আরবসহ ৬ টি দেশে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে উপনীত হওয়ায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। যুক্তরাজ্যের সাথে যেসব দেশের ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে সেসব দেশের মধ্যে রয়েছে: ভারত, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ফিনল্যান্ড, আফ্রিকা, এল সালভাদর, ডেনমার্ক, ক্রোয়েশিয়া, কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা: বেলজিয়াম,বুলগেরিয়া,কানাডা,চিলি,হংকং,এস্তোনিয়া,লাটভিয়া, লিথুনিয়া,ইরান,আয়ারল্যান্ড,ইসরায়েল,কুয়েত,মরক্কো, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, সুইজারল্যান্ড ও তুরস্ক। এসব দেশ বিভিন্ন মেয়াদে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বাতিল রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
বিবিসি জানায়,অতি সহজে ও দ্রুত ছড়ানো নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের এই নতুন ভাইরাসটিও মিউটেশনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হতে পারে। তার বৈশিষ্ট্য এবং আচরণে পরিবর্তন ঘটতে পারে। যেটি গবেষকদের অবাক করেছে,তা হলো, এই ভাইরাসটি অনেক বেশি সহজে এবং দ্রুত ছড়াচ্ছে। আগেরটির তুলনায় এই নতুন করোনা ভাইরাস ৭০ শতাংশ বেশি হারে ছড়াচ্ছে। ব্রিটিশ সরকারকে যে শুক্রবার আচমকা আবারও কঠোর লকডাউন জারি করতে হলো, তার পেছনে এটাই কারণ। এটি সরকারের মধ্যে যথেষ্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক স্বীকার করেছেন যে,ক্রিসমাসের প্রাক্কালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল বলেই এই কঠোর বিধিনিষেধ জারি করতে হয়েছে।তিনি এমন ইঙ্গিতও দেন যে এবারের কঠোর লকডাউন দু’মাস ধরে চলতে পারে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মাত্র কয়েকদিন আগেই ক্রিসমাসের সময় বিধিনিষেধ শিথিল করার কথা বলছিলেন এবং তার কথা ছিল, এটা না করলে তা হবে অমানবিক।কিন্তু তিনদিনের মাথায়, তাকে সেই পরিকল্পনা শুধু বাদই দিতে হলো না, উল্টো আর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হলো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে,এই নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস এখন নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক এবং অস্ট্রেলিয়াতেও নাকি পাওয়া গেছে। এ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন এবং ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা নতুন এই স্ট্রেইনের বিষয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। যুক্তরাজ্যের গবেষকরা লন্ডন এবং আশে-পাশের অঞ্চলে যে ভাইরাসের বিস্তার দেখছেন, সেটিকে তারা নিউ ভ্যারিয়েন্ট, অর্থাৎ নতুন বৈশিষ্ট্যের ভাইরাস বলে বর্ণনা করছেন।
তবে এটি যে আগেরটির চেয়ে অনেক বেশি প্রাণঘাতী বা মারাত্মক,সেরকম প্রমাণ তারা এখনো পাননি।এটিকে মোকাবেলার ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের টিকা যে ভিন্ন ফল দিতে পারে – এমন কথাও তারা বলছেন না।বার্তা সংস্থার রয়টার্স জানায়,ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রোবের্তো স্পেরানজা বলেছেন,সম্প্রতি লন্ডনে আবিষ্কৃত কোভিডের ধরনটি উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো। আমাদের বিজ্ঞানীদেরও এটি পরীক্ষা করে দেখা দরকার। এর মধ্যে আমরা সবচেয়ে বিচক্ষণ পথটি বেছে নিয়েছি।
ইতালি, যুক্তরাজ্য থেকে ছেড়ে আসা সব ধরনের ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর পাশাপাশি গত ১৪ দিনের মধ্যে ব্রিটেন ঘুরে আসা সবার ইতালি প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটি। ইতোমধ্যে ইতালিতে যুক্তরাজ্য ফেরত এক জনের শরীরে নতুন প্রজাতির করোনা শনাক্ত হয়েছে।জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েনস্ ইসপান সরকারি গণমাধ্যম এআরডিকে বলেছেন,এটি (ভাইরাসের এই মিউটেশনটি) এখনও জার্মানিতে পাওয়া যায়নি, কিন্তু অবশ্যই ব্রিটেন থেকে আসা প্রতিবেদনগুলোকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।
ভারতের প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়,যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনের প্রাদুর্ভাব হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছিল। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আপাতত বিমান চলাচল বন্ধ করতে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই গতকাল সোমবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিমান পরিষেবা মন্ত্রণালয়।
আজ মঙ্গলবার রাত ১১টা ৫০ মিনিট থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। তার আগ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য থেকে ভারতে পৌঁছানো যাত্রীদের বিমানবন্দরে বাধ্যতামূলকভাবে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করতে হবে।এপি’র খবরে বলা হয়,রোববার জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রথমে টুইট করে বিমান বন্ধের ঘোষণা করেন। পরে সরকারের মুখপাত্রও সে কথা জানান। বলা হয়েছে, রোববার সকাল ছয়টা থেকে এই নিয়ম কার্যকরী করা হয়েছে। আপাতত ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।শুধু যুক্তরাজ্য নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করেছে জার্মানি।
বলা হয়েছে, খুব প্রয়োজন না হলে কেউ যেন দক্ষিণ আফ্রিকা না যান। কারণ সেখানেও করোনার সংক্রমণ নতুন করে দ্রুত ছড়াতে শুরু করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যারা জার্মানিতে এসেছেন ফেডারেল পুলিশ তাঁদের উপর কড়া নজর রাখছে। তাঁদের চলাফেরায় নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। ফরাসি বন্দর থেকে যুক্তরাজ্যে পণ্য পাঠানো বন্ধ রাখা হয়েছে। সমস্ত ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে বন্দর এলাকায়।
তারই মধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বৈঠক করেছেন। যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইন থেকে ইউরোপকে কী ভাবে রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে সরকার। তারই মধ্যে যুক্তরাজ্যের নতুন ভাইরাস কপালে ভাঁজ ফেলেছে সকলের।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস আগের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি গতিতে ছড়ায়। যার ফলে দক্ষিণ ইংল্যান্ডে সম্প্রতি অতি দ্রুত গতিতে করোনা ছড়িয়েছে।গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এই ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, তা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। লন্ডনের নতুন যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের ৬০ শতাংশই নতুন ভাইরাসের কবলে পড়েছেন।
জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, রোববার এই নতুন ভাইরাসে এক হাজার ১০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই ভাইরাস প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকায় দেখা গিয়েছিল।জনসন বলেছেন, যত দিন যাচ্ছে, ততই এই ভাইরাস সম্পর্কে আমরা বেশি করে জানছি। ভাইরাস যদি চরিত্র বদল করে আক্রমণ করে, তবে আমাদেরও আত্মরক্ষার চরিত্র বদল করতে হবে।ভাইরাসের চরিত্র বদল করা নতুন নয়।
করোনা ভাইরাসেরও বিভিন্ন প্রজাতি আছে। তবে এখনো পর্যন্ত সেই প্রজাতিগুলির মধ্যে আর বেশি ক্ষতিকারক কিছু দেখা যায়নি। কিন্তু নতুন করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তা আগের তুলনায় অনেক বেশি ছোঁয়াচে এবং ভয়ঙ্কর দ্রুত ছড়াচ্ছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা এমনিতেই মারাত্মক। ফলে করোনা হলে তাতে জীবনের ঝুঁকি থাকে। সে জন্যই দ্রুত করোনা ছড়ালে তা আরো মারাত্মক হয়ে উঠতে বাধ্য।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন,নতুন এই স্ট্রেইন ইনফেকশাস বেশি, কন্টাজিয়াস অর্থাৎ ছড়ায় বেশি, কিন্তু অতিরিক্ত ডেডলি না।অ্যাভেইলেবল ভ্যাকসিনগুলো তার বিরুদ্ধে কাজ করবে। কারণ, এখন এমনও মিউটেশন হয়নি যে, ভ্যাকসিনকে প্রভাবিত করতে পারে।মূলত তিনটি কারণে এই ভাইরাসের নতুন রূপটি সবার জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নতুন ভাইরাসটি এর অন্যান্য সংস্করণকে দ্রুত প্রতিস্থাপন করছে। এটিতে এমন মিউটেশন রয়েছে, যা ভাইরাসের অংশকে প্রভাবিত করে। মিউটেশনের মাধ্যমে ভাইরাসটির সংক্রমিত হওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।যুক্তরাজ্যের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভ্যালান্স বলেন, অস্বাভাবিকভাবে বড় সংখ্যায় এর রূপান্তর দেখা গেছে।করোনাভাইরাসের নতুন এ স্ট্রেইনটির ২৩টি ভিন্ন ভিন্ন পরিবর্তন দেখা গেছে।ইংল্যান্ডের প্রধান মেডিক্যাল কর্মকর্তা অধ্যাপক ক্রিস হুইটি বলেন,নতুন স্ট্রেইনটি উচ্চ মৃত্যু হার কিংবা ভ্যাকসিন ও চিকিৎসাকে অকার্যকর করে দিচ্ছে বলে কোনও আলামত এখনও পাওয়া যায়নি। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে কাজ চলছে।
বাংলাদেশ কি করবে:এদিকে অনেক দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় উড়োজাহাজ চলাচল যখন স্বাভাবিক হয়ে আসছিল তখন সংক্রমণ বৃদ্ধি ও নতুন প্রজাতির ভাইরাসের কারণে আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট চলাচল ফের বন্ধ হতে পারে। এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে চিন্তা-ভাবনা চলছে বাংলাদেশেও। শিগগিরই আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে বিশ্বব্যাপী চলমান মহামারি করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ফ্লাইট বন্ধ হবে কী হবে না, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে বিমানের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন গতকাল সোমবার বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেন মারাত্মক আকার ধারণ না করে, সেজন্য এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট চলাচল ফের বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, প্রথম দফায় সংক্রমণকালে ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীদের মাধ্যমেই দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়। পরে তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট বন্ধ করার ব্যাপারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ মহলে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।এ ব্যাপারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সচিব মো. মহিবুল হক গতকাল বলেন, আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হবে কি-না কিংবা নির্দিষ্ট কোনো দেশে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হবে কি-না, এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তারা লিখিতভাবে কোনো চিঠি পাননি বলে জানান তিনি। বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি খুব দ্রুত ছড়ালেও এখনও পর্যন্ত এতে মৃত্যুহার বেশি এটা প্রমাণিত নয়। তবে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ করেছে অনেক দেশ এবং বাংলাদেশেরও সেটাই করা দরকার।জাতীয় পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে খুব শিগগিরই তারা মিটিং ডাকবেন।
সেখান থেকে সুপারিশ যাবে সরকারের কাছে। এদিকে সৌদি আরবের জেদ্দা, রিয়াদ ও দাম্মামগামী বাংলাদেশ বিমানের সব ফ্লাইট গতকাল সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য বাতিল করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৌদি আরব সরকার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ৬ টি আন্তর্জাতিক রুটে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্লাইট স্থগিত করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ম্যানচেস্টার,মক্কা,মদিনা, ব্যাংকক, কাঠমান্ডু,কুয়েত রুটের সব ফ্লাইট বাতিল করা হলো। এর আগে সৌদি আরব রোববার সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। এ ছাড়া সড়ক ও সমুদ্রপথে দেশটিতে প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। বিদেশীদের জন্য ওমরাহ পালনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরব এমন পদক্ষেপ নেয় বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়।