সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে আইন আছে কিন্তু সঠিক ভাবে প্রয়োগ না করার কারণে চোরাচালানীরা মদ, গাঁজা, বিড়ি ও ইয়াবাসহ গরু, কাঠ, বরশি ও কয়লা ওপেন পাচার করছে।

taharpur semanto

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :  সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে আইন আছে কিন্তু সঠিক ভাবে প্রয়োগ না করার কারণে চোরাচালানীরা মদ, গাঁজা, বিড়ি ও ইয়াবাসহ গরু, কাঠ, বরশি ও কয়লা ওপেন পাচার করছে। আর পাচারকৃত মালামাল থেকে সোর্স পরিচয়ধারীরা লাখ লাখ টাকা চাঁদা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সীমান্তের চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্পের চিন্তুছড়া, রাজাইছড়া, চাঁনপুর টিলাছড়া ও টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের রজনী লাইন-শিবপুর ছড়া দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁর করা হচ্ছে গরু। ১টি গরু পাচারের জন্য চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্পের নামে ১হাজার টাকা, থানার নামে ১হাজার টাকা, উত্তর বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নামে ৫শত টাকা ও ২ মেম্বারের নামে ৫শত টাকা চাঁদা নিচ্ছে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী চাঁনপুর গ্রামের একাধিক মাদক মামলার আসামী আবু বক্কর,

taharpur semanto
তার ছেলে আলমগীর ও বড়গোফ বারেকটিলা গ্রামের রফিকুল মিয়াসহ আরো ১ জন। তাদের নেতৃত্বে মদ, গাঁজা, ইয়াবা ও বিড়িসহ আরো বিভিন্ন মালামাল অবৈধভাবে পাচার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে টেকেরঘাট ও বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমাছড়া, টেকেরঘাট ও লালঘাট এলাকা দিয়ে ভারতীয় কয়লা, কাঠ (ফালি), লাকড়ি ও মাছ ধরার বরশি পাচার করে প্রতি শুক্রবার ও সোমবার। বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত ড্রাম্পের বাজার ও নতুন বাজারে ওপেন বিক্রি করা হচ্ছে। এজন্য বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের নামে ১টি ফালি থেকে ১শত টাকা, ২০টি বরশি থেকে ২শত টাকা চাঁদা নিচ্ছে ইয়াবাসহ আরো একাধিক মামলার আসামী লালঘাটের সোর্স কালাম মিয়া। তার নেতৃত্বে ইয়াবা ও মদ পাচাঁর করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের ১১৯৬পিলার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে ভারত থেকে কয়লা ও কয়লার বস্তার ভিতরে করে মদ, গাঁজা ও ইয়াবা পাচার করছে লালঘাট গ্রামের মাদক মামলার আসামী আব্দুল আলী ভা-ারী, রমজান মিয়া ও খোকন মিয়াগংরা। তারা কয়লা পাচার করে

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে

 

প্রথমে বাড়িঘরের ভিতরে ও বসতবাড়ি সংলগ্ন পুকুর, খাল ও হাওরের পানিতে লুকিয়ে রাখে। একই সীমান্তের বাঁশতলা তেতুল গাছের নিচ দিয়ে কয়লা পাচাঁর করে একই ভাবে লুকিয়ে রাখে চাঁরাগাঁও গ্রামের শফিকুল ইসলাম ভৈরব ও তার মামতো বোন জামাই বাবুল মিয়াগংরা। পরবর্তীতে চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের নামে পাচাঁরকৃত ১বস্তা কয়লা থেকে ৬০টাকা ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য থেকে ৫শত থেকে ২হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করে সোর্স পরিচয়ধারী আব্দুল আলী ভান্ডারী, রমজান মিয়া ও শফিকুল ইসলাম ভৈরব। চাঁদা উত্তোলনের পর সমসার হাওরে চোরাচালালানী খোকন মিয়ার নৌকায় অবৈধ মালামাল বোঝাই করা হয়। এরপর পাটলাই নদীপথে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলা বাজার সংলগ্ন দক্ষিণে অবস্থিত মনতলা ব্রিজের কাছে নিয়ে মালামাল বিক্রি করে চোরাচালানী খোকন মিয়া। লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে কয়লা পাচারের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য ও গরু, কাঠ, বিড়ি পাচার করার পর সোর্স পরিচয়ধারীরা নামে-বেনামে চাঁদা উত্তোলন করলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় না। যার ফলে চিহ্নিত চোরাচালানীরা নিজেদেরকে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সোর্স পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে তাদের অবৈধ কর্মকা- দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে
এ ব্যাপারে চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নির্মল বলেন, চোরাচালানের বিষয়ে আমি কিছু জানি না এবং আমাদের কোন সোর্স নাই। সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলমের সরকারি মোবাইল (০১৭৬৯-৬০৩১৩০) নাম্বারে কল করলে নাম্বারটি ব্যস্ত পাওয়া যায়, তিনি ফোন রিসিভ করেন না। এ ব্যাপারে বড়ছড়া, বালিয়াঘাট ও চাঁরাগাঁও এলাকার ব্যবসায়ী রাশিদ মিয়া, জমির উদ্দিন, শফিকুল মিয়া, তারা মিয়া, শাহিন মিয়া, হারুন মিয়া, রাসেল মিয়া, রতন মিয়াসহ আরো অনেকেই বলেন, র‌্যাব বিভিন্ন সময় সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক ও অস্ত্রসহ লোক আটক করলেও বিজিবি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। তাই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা প্রয়োজন।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে

Post a Comment

Previous Post Next Post