কক্সবাজার থেকে কফিল উদ্দিন আনু: মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা করা-ওসি প্রদীপের কালো টাকা সাদা করার দায়িত্বে অনড় ছিল টেকনাফের সিআইপি ঈসমাইল। টাকার বিনিময়ে ক্রসফায়ার দেয়া এবং মাদক ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করা বর্তমান সময়ের সব চেয়ে আলোচিত টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসের কালো টাকা সাদা করার দায়িত্বে ছিলেন টেকনাফ উপজেলার পরিচিত মুখ সিআইপ ঈসমাইল। সাবরাং ইউনিয়নের বাসিন্দা ঈসমাইল দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্যে থাকার সুবাদে কীভাবে টাকার লেনদেন করতে হয় তা খুব ভালো করেই জানা ছিল। তাই সেই অপকৌশল দিয়ে ওসি প্রদীপের বেশিরভাগ কালো টাকা সাদা করে প্রদীপের আত্মীয় স্বজনের কাছে পৌঁছে দিতেন ঈসমাইল। বিনিময়ে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখার স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি।
সেই পথে অনেক দূর এগিয়েও গেছে কারণ বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগ নেতা নুর হোসাইনকে ইতো মধ্যে ৪০ হাজার ইয়াবা মামলায় আসামি করে এলাকা ছাড়া করেছেন ওসি প্রদীপ আর ঈসমাইল। গত ইউপি নির্বাচনে ঈসমাইলের বড় ভাই সোনা আলী চেয়ারম্যান নির্বাচন করলেও হেরে যায় নুর হোসেনের কাছে সেই প্রতিশোধ নিতেও কাজ করেছে ওসি প্রদীপ এবং ঈমসাইল। তবে মাত্র ৫/৬ মাস আগে ওসি প্রদীপের সাথে পরিচয় হয়েছে বলে ঈসমাইল দাবি করলেও দেড় বছর আগের তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল।
স্থানীয়দের দাবি সাবেক ওসি প্রদীপ ছিল টেকনাফ উপজেলার স্বঘোষিত বাদশা। এখানে কোনো এমপি বা জনপ্রতিনিধি কিছুই না বরং সব জনপ্রতিনিধি ওসির কাছে অসহায় ছিল। কারণ সে কাউকে যে কোনো সময় ধরে নিয়ে ক্রয়ফায়ার দেয়া ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। তাদের দাবি প্রথম দিকে সত্যিকার অর্থে কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও গত এক বছর ধরে নিহত হয়েছে সবাই নিরীহ এবং টাকা দিতে না পারায়, প্রবাসী অথবা কন্ট্রাক কিলিংয়ের শিকার। আর ওসি প্রদীপ এ অবৈধ পথে যা টাকা আয় করত তা বিদেশ হয়ে কৌশলে দেশে আনার একমাত্র ব্যক্তি ছিল সিআইপি ঈসমাইল।
আবার সাবরাং এলাকা ঈসমাইলের নতুন বিলাসবহুল বাড়িতে প্রায় সময় ওসি এসআইসহ ঈসমাইল বসে ক্রসফায়ারের হিসাব এবং টাকার লেনদেন করত। এছাড়া অনেক ব্যক্তি থেকে মাদক মামলায় আসামি করা হবে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করে ওসিকে দিয়েছে ঈসমাইল। আর সে নিজেও নিয়েছে বিপুল টাকা। মেজর সিনহা হত্যার পর একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে ওসি প্রদীপের সব অপকর্ম সাথে বেরিয়ে আসতে থাকে তার অপকর্মের সাথীদের নাম।
এ ব্যাপারে সিআইপি ঈসমাইল জানান, মাত্র ৫/৬ মাস আগে ওসি প্রদীপের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে। তার সাথে আমার কোনো ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। মূলত আমি আগামী নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ব সেটা বুঝতে পেরে অনেকে ইতোমধ্যে ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে এটা তারই অংশ।