মোবাইল ব্যাংকিংয়ে করোনার আঘাত

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার  : মহামারী করোনার ধাক্কা লেগেছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। গত মার্চে দৈনিক লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৮৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। কিন্তু এপ্রিল মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯৬৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। যা আগের মাস মার্চের তুলনায় ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার বিস্তার রোধে চলতি বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এতে ব্যবসায়িক ও স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হওয়ায় আর্থিক লেনদেনও কমে যায়। যার প্রভাব পড়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। এছাড়া অনেকে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে যাওয়ায় স্বাভাবিক লেনদেনও কম হয়। পাশাপাশি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অধিকাংশের পড়ালেখার খরচ বাড়ি থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মাধ্যমে আসতো। মার্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় সেটাও হয়নি। সব মিলিয়ে মার্চের তুলনায় এপ্রিলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমএফএস এর হালনাগাদ পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, বর্তমানে মোট ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ে জড়িত। চলতি বছরের এপ্রিল শেষে তাদের নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট কোটি ৫১ লাখ ২৯ হাজার। যা আগের মাস মার্চে ছিল আট কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। এমএফএস নীতিমালা অনুযায়ী, টানা তিনমাস একবারও লেনদেন করেনি এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় গণ্য করে থাকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই হিসাবে এপ্রিল শেষে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এমএফএস-এ গত এপ্রিলে প্রতিদিন গড়ে ৭২ লাখ ৫২ হাজার ১৬৫টি লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ৯৬৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা আদান-প্রদান হয়েছে। যা আগের মাস মার্চের তুলনায় ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ কম। মার্চে দৈনিক লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৮৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এপ্রিলে পুরো মাস জুড়ে লেনদেন হয়েছে ২৯ হাজার ২৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা। মার্চে যার পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ৭৮৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা। মার্চের তুলনায় এপ্রিলে টাকার অংকে লেনদেন কমেছে ২৭ শতাংশ। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ২৬৫ জন।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে। এমএফএসের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে জমা পড়েছে ৮ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। যা আগের মাসের চেয়ে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ কম। উত্তোলন করেছে ৮ হাজার ২২৭ কোটি টাকা। যা মার্চের তুলনায় ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ কম।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে

 

 

Post a Comment

Previous Post Next Post