kbdnews ডেস্ক: ভারী বর্ষণে গত দুই সপ্তাহ ধরে বন্যার কবলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন বিশ লাখেরও বেশি মানুষ। টানা বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট এই বন্যায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ জন মারা গেছেন বলে দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে ক্ষমতাসীন বিজেপি দলীয় রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রীকে কর্দমাক্ত পানি দিয়ে হেঁটে বন্যায় আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করতে দেখা গেছে। তার ওই উদ্ধার অভিযানের মধ্য দিয়ে করোনা মহামারিকালে আসামের বন্যাকবলিত মানুষের দুর্দশার চিত্র ফুটে উঠেছে। ভারী বর্ষণে হাজার হাজার গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য মানুষজনের জন্য তৈরি করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। আসামে ভারী বর্ষণে প্রতিবছর বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলেও এবারের বন্যার চিত্রটা ভিন্ন। মহামারি করোনার ঊর্ধ্বমূখী সংক্রমণ নিয়ে তৈরি উদ্বেগের মধ্যে বন্যায় জনজীবন আরও বিপর্যস্ত।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আসাম সরকারের মন্ত্রী মৃণাল সাইকাল কাদাপানি ঠেলে দুটি শিশু ও একজন নারীকে বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ার তাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নৌকাতে করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘বন্যা আমার নির্বাচিত এলাকা বন্যার তোড়ে ভেসে গেছে। আটকা পড়াদের উদ্ধার করছি।’ কর্মকর্তারা জানান, ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
মারা গেছে অন্তত ৫১টি বন্যপ্রাণী। এ ছাড়া ১০২টি বন্যপ্রাণীকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বন্যার কবলে পড়ে পাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে কয়েকটি বাঘ ও বিরল এক সিং-ওয়ালা গ-ার। প্রসঙ্গত, বিশ্বের বিরল একটি প্রাণী হলো এক সিংওয়ালা গ-ার। পৃথিবীর মোট এক সিংওয়ালা গ-ারের দুই-তৃতীয়াংশের আবাসস্থল হলো এই কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক। বিভিন্ন স্থানে পানিতে ডুবে গেছে বহু রাস্তা, ঘর-বাড়ি। বন্যাদুর্গতদের আশ্রয় দিতে কর্তৃপক্ষ বিশটি জেলায় ৪৮০টি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এগুলোতে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে বিবিসি বলছে, গত কয়েকদিনে রাজ্যজুড়ে প্রায় একশটি নৌকা নামানো হয়েছে বলে জানা গেছে।