বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) বিপর্যস্ত অর্থনীতি

অর্থনীতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার :   বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) বিপর্যস্ত অর্থনীতি। কমেছে আমদানি-রফতানি। থমকে আছে ব্যবসা-বাণিজ্য। কমে গেছে বিনিয়োগের গতি। অর্থনীতির এমন নাজুক পরিস্থিতিতে বেসরকারি ঋণ বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে ২০২০-২১ অর্থবছরের নতুন মুদ্রানীতি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহে এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মহামারীর কারণে এবার ভার্চুয়াল মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা মহামারীর কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে আছে। পরিস্থিতি উত্তরণে প্রায় লাখ কোটি টাকার বিশেষ ঋণের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। প্যাকেজ বাস্তবায়নে প্রচলিত নীতিমালায় অনেক ছাড় ও শর্ত শিথিল করা হয়েছে। কিন্তু আগে থেকেই কমতে থাকা বেসরকারি ঋণের গতি লকডাউনের কারণে আরও নিচে নেমে গেছে। এ পরিস্থিতিতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগমুখী করে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপরও মুদ্রানীতিতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর নীতিতে একমত হয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকরা।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিবছর দু’বার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করতো। ছয় মাস অন্তর এই মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্য মুদ্রানীতি প্রকাশ করা হতো জানুয়ারি মাসে। কিন্তু গত বছর থেকে অর্থবছরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার জন্য বছরে দুবার নয়, একবার মুদ্রানীতি ঘোষণার নিয়ম চালু করা হয়েছে। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরের (২০১৯-২০) ১১ মাসে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ হয়েছে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ। যেখানে মুদ্রানীতিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমলেও বেড়েছে সরকারের ঋণ। মুদ্রানীতিতে সরকারের ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ১১ মাসে সরকারের ঋণপ্রবাহ লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ৪৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন হয়নি বিদায়ী মুদ্রানীতিতে। অভ্যন্তরীণ ঋণপ্রবাহ ১৫ দশমিক ৯ শতাংশের বিপরীতে ১১ মাসে অর্জিত হয়েছে ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এদিকে তারল্য সংকট মোকাবিলা ও টাকার প্রবাহ বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আমানতের বিপরীতে বাধ্যতামূলক নগদ জমার হার দুই দফায় দেড় শতাংশ কমিয়েছে। এতে করে ব্যাংকগুলোতে বাড়তি ২০ হাজার কোটি টাকা নগদ তারল্যের জোগান হয়েছে। পাশাপাশি করোনায় আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় ঘোষিত প্যাকেজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে এক বছরের জন্য ধার নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর ঋণসীমা (এডিআর) বাড়িয়ে ৮৫ শতাংশ থেকে ৮৭ শতাংশ করা হয়েছে।

অর্থনীতি

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) বিপর্যস্ত অর্থনীতি

Post a Comment

Previous Post Next Post