ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
ভারতের রাজধানী দিল্লির লাগোয়া উত্তর প্রদেশের জনবহুল শহর গাজিয়াবাদে দুষ্কৃতকারীর গুলিতে নিহত হলেন এক তরুণ সাংবাদিক। এই হত্যাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি ফের সরগরম হয়ে উঠেছে। রাজ্য সরকারের নিন্দায় সরব বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এই ঘটনা ফের প্রমাণ করল বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন।
নিহত সাংবাদিকের নাম বিক্রম যোশী (৩৫)। সোমবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ গাজিয়াবাদের বিজয়নগরে দুই কন্যাকে স্কুটারে চাপিয়ে বাড়ি ফেরার সময় স্থানীয় ‘জন সাগর টুডে’ কাগজের এই সাংবাদিক আক্রান্ত হন। সিসিটিভির ক্যামেরায় দেখা গেছে, কয়েকজন যুবক জোর করে তাঁর স্কুটার থামায়। টেনে হিঁচড়ে তাঁকে কাছে দাঁড়ানো একটা গাড়ির কাছে নিয়ে আসে। দুই কন্যা ভয়ে ছুটে একধারে সরে যায়। একজন বিক্রমের মাথায় গুলি করে। সবাই পালানোর পর বড় মেয়েকে ছুটে বাবার কাছে আসতে দেখা যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় বিক্রমকে স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। একটি অস্ত্রও পাওয়া গেছে বলে গাজিয়াবাদের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। কর্তব্যে অবহেলার জন্য দুই পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি সাহায্যের কথা জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
নিহত সাংবাদিকের পারিবারিক সূত্রে বলা হয়, ঘটনার চার দিন আগে বিক্রম তাঁর ভাগনির হেনস্তাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় নালিশ করেন। অভিযোগ, পুলিশ কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
ঘটনা জানাজানি হতেই শুরু হয়েছে আদিত্য নাথ নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের রাজনৈতিক সমালোচনা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিজেপির বিরুদ্ধে টুইট করে বুধবার বলেন, ‘প্রতিশ্রুতি ছিল রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠার। উপহার দিয়েছে গুন্ডারাজ।’ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘উত্তর প্রদেশের জঙ্গলরাজ এমনই যে গুন্ডাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পর মানুষকে ভয়ে ভয়ে দিন কাটাতে হয়। বিজেপি তার পূর্বসূরির মতোই ব্যর্থ।’ প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
আইন শৃঙ্খলার প্রশ্নে উত্তর প্রদেশ সরকার বেশ কিছুদিন ধরেই তীব্র সমালোচিত। গুন্ডারাজ খতম করার জন্য রাজ্য পুলিশ যথেচ্ছ ‘এনকাউন্টার’ করছে বলে সর্বস্তরীয় অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী আদিত্য নাথ নিজেই বলেছেন, দুষ্কৃতকারীদের মায়া দেখানো বৃথা। সম্প্রতি এক দুর্বৃত্তের আক্রমণে ৮ পুলিশ কর্মীর মৃত্যুর পর পুলিশি হেফাজতে একের পর এক অভিযুক্তর মৃত্যু নিয়ে হয়। এ নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে। এই অবস্থায় সাংবাদিক বিক্রম জোশীর হত্যা রাজ্য সরকারের সমালোচনায় নতুন করে ঘৃতাহুতি দিল।