মিয়া পারভেজ আলম মোল্লাহাট প্রতিনিধি: মোল্লাহাট উপজেলার শাসন গ্রামে স্ত্রী’র সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে স্বামী কর্তৃক গভীররাতে গৃহ-শিক্ষককে হত্যা ও লাশ মাটিতে পুতে রাখা (গুম)’র ঘটনা দীর্ঘ প্রায় পাঁচবছর পরে ফাঁস হয়েছে। সম্প্রতি ওই দম্পতির মাঝে তুমুল ঝগড়া হওয়ায় স্ত্রী শিলা বেগম (৪০) তার স্বামী জামাল মোল্লা (৫০)’র বিরুদ্ধে হত্যার বিশদ তথ্য ফাঁস করেন। হত্যা ও লাশ গুমের শিকার গৃহ-শিক্ষক একই গ্রাম ও প্রতিবেশি মৃত হাসেন শরীফের ছেলে মোঃ রবিউল ইসলাম শরীফ (২৫)। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই মোঃ হাবিবুর রহমান শরীফ গত ২৬/০৮/১৯ ইং তারিখে বাগেরহাট আদালতে অভিযোগ করেছেন।
আদালত উক্ত অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিলেও লাশ/দেহাবশেষ তুলে পরীক্ষা করার আদেশ বা অনুমতি এখনও প্রক্রিয়াধীন। যে,কারনে লাশ পুতে রাখা স’ান গত তিনদিন ধরে পাহারায় রাখছে থানা পুলিশ।
অভিযোগকারী মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, তার বড়ভাই মোঃ রবিউল ইসলাম শরীফ প্রতিবেশী জামাল মোল্লার বাড়ি গিয়ে তার ছেলে রনি মোল্লা ও মেয়ে ঝুমুরকে প্রাইভেট পড়াতেন। ছেলে-মেয়েকে পড়ানোর একপর্যায়ে জামালের স্ত্রীর সঙ্গে হাবিবুরের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অনৈতিক সম্পর্কের জেরে গত ৩০/১০/২০১৪ ইং তারিখ ঘটনার রাত ১১টায় জামাল তার দালান ঘরের এক কক্ষে নিজের স্ত্রী শিলা’কে আটকে রাখে এবং অপর কক্ষে হাবিবুরকে হাত-পা বেধে গলায় ফাস দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। জামাল ও তার ছেলে রনি একসাথে এ হত্যাকান্ড ঘটায় এবং তাদের বাড়ির উঠানের সামনে গর্ত খুড়ে লাশ পুতে রাখে। পরবর্তীতে নিজের ভাইকে অনেক স’ানে খুজেও আর পায়নি তারা। হাবিবুর আরো জানায়, সম্প্রতি নিজেদের মাঝে ঝগড়ার কারনে স্ত্রী শিলাকে হত্যার হুমকী দেয়াসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় স্বামী জামাল। ফলে স্বামীর প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে হত্যার বিশদ ঘটনা ফাঁস করে দেয় স্ত্রী শিলা বেগম। উক্ত ঘটনার অভিযোগের পর শিলা-জামাল দম্পতি আবার মিলেছে এবং বাড়ি-ঘর ছেড়ে আত্ন-গোপনে রয়েছে। ভিকটিম পরিবারের সকলে এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করেন।
এ বিষয়ে জামালের প্রতিবেশী ও ইউপি সদস্যা মর্জিনা বলেন, রবিউল ঢাকায় কাপড়ের ব্যবসা করতো, সেই ব্যবসার টাকা জামালকে ধার দিয়েছিলো, পরবর্তীতে তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের জের এবং উক্ত টাকা আত্নসাত করতে হাবিবুরকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুতে রাখে জামাল।
মানবাধিকার সংগঠক স’ানিয় মনির মুন্সি বলেন-মানুষ ভূল বা অপরাধ করলে প্রচলিত আইনে তার বিচার হওয়া উচিৎ। আইন হাতে তুলে নেয়া বা জঘণ্য এ হত্যা কান্ডের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি/বিচার দাবী করেন তিনি।
থানা অফিসার ইনচার্জ কাজি গোলাম কবীর জানান, জঘণ্য এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস’া গ্রহনে তিনি বদ্ধপরিকর। ইতিমধ্যে লাশ পুতে রাখা স’ান পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখাসহ দেহাবশেষ তুলতে আদালতের অনুমতি চেয়েছেন। যে,কোন সময় অনুমতি পাবেন এবং পরবর্তী ব্যবস’া গ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি।