মানিকগঞ্জে আটকে রেখে তরুণী ধর্ষণ অভিযুক্ত ২ পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার

 

পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ও মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : বাংলাদেশের মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ডাকবাংলোতে আটকে রেখে তরুণীকে ধর্ষণ ও জোর করে ইয়াবা সেবন করানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-সাটুরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাজহারুল ইসলাম। ধর্ষণের শিকার ঐ তরুণী সোমবার রাতে সাটুরিয়া থানায় মামলা করেন। এছাড়া ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এরপর রাতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাটুরিয়া থানার ওসি তদন্ত আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণের জন্য ঐ তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা রাতেই সম্পন্ন হয়েছে। অপরাধী হলে পুলিশ সদস্য হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

সাটুরিয়া থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, ধর্ষণের শিকার ঐ তরুণী বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় উপপুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপপুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের ২ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল তাদের আদালতে হাজির করা হয়। ডাকবাংলোতে আটকে রেখে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দার হোসেন ও এএসআই মাজহারুল ইসলামের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাদের মানিকগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ারের আদালতে হাজির করে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। এ সময় বিচারক গ্রেফতার ২ পুলিশ কর্মকর্তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাটুরিয়া থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার পুলিশ সুপারের কাছে নির্যাতনের শিকার ঐ তরুণীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান ও ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দিকী গত সোমবার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেন।

তদন্তকারী এক সদস্য মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান জানান, সাটুরিয়া থানার ২ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয় নিয়ে গত সোমবার তদন্ত করা হয়। তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতনের শিকার ঐ তরুণী তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন। দিনভর প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

উল্লেখ্য, উপপুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন আশুলিয়া থানায় কর্মরত থাকার সময় এক নারীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা হাওলাত নিয়ে জমি কেনেন। কথা ছিল জমি বিক্রির লাভ তাকে দেয়া হবে। সেই হিসাবে তিনি সেকেন্দার হোসেনের কাছে প্রায় ৩ লাখ টাকা পাবেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। সাটুরিয়া থানায় বদলি হয়ে আসার পরও সেকেন্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। গত বুধবার বিকালে প্রতিবেশী ভাগি্নকে নিয়ে সাটুরিয়া থানায় আসেন ঐ নারী। এরপর সেকেন্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা দেবেন বলে তাদের সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে নিয়ে যান।

সন্ধ্যার পর সাটুরিয়া থানার এএসআই মাজহারুল ইসলামকে ডাকবাংলোতে নিয়ে যায় সেকেন্দার হোসেন। সেখানে ডাকবাংলোর একটি কক্ষে ২ পুলিশ কর্মকর্তা ইয়াবা সেবন করে ও তার সঙ্গে আসা ঐ তরুণীকে জোর করে ইয়াবা সেবন করায়। ২ পুলিশ কর্মকর্তা ২ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন ঐ তরুণী।

Post a Comment

Previous Post Next Post