স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতি মরণব্যাধির মতো ছড়িয়ে গেছে। এর গোড়াপত্তন ৭৫-এর পরের শক্তি করেছে। জঙ্গিবাদ সৃষ্টিতে সরকারের প্রচ্ছন্ন সাপোর্ট ছিল। সমাজকে এই ব্যাধি থেকে মুক্ত করতে হবে। গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। জঙ্গিবাদ-দুর্নীতি-সন্ত্রাস থেকে মুক্তি পেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সবাইকে কাজ করতে হবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির মতো কালব্যাধি থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। যারা এই কঠিন কাজ সম্পন্ন করছেন, তাতের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মাদকের খারাপ দিকগুলো সমাজে বেশি বেশি প্রচারের মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
উপজেলা পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সংকট নিরসন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষকে নিরাপদ জীবন দেয়াই আমাদের লক্ষ্য। মনে রাখতে হবে, অবশ্যই সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লোকবল অনুযায়ী যানবাহন, জলযান ও পরিবহণ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে অবশ্যই পরিকল্পনামাফিক চাহিদাপত্র প্রণয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির আকার যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা। ট্র্যাফিক সমস্যা এখন বড় সমস্যা। দুর্ঘটনার জন্য চালকের পাশাপাশি, পথচারী ও নাগরিকরাও দায়ী। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মানুষ কেন অস্বাভাবিক আচরণ করে, তা বুঝি না। যানজট নিরসনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য রয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাতে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে? মানুষের জীবনের জানমালের নিরাপত্তাসহ সার্বিকভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধরে রাখতে হবে।
দুর্নীতি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সমাজে যে সমস্যাগুলো আছে, তার মধ্যে দুর্নীতি কালব্যাধির মতো ছড়িয়ে আছে। দুর্নীতিই একটা কালব্যাধি, এটা সমাজের অগ্রগতি যথেষ্ট ব্যাহত করে। সেক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে। দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এ সময় তিনি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাপকহারে বেতনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা তুলে ধরেন।
ভবিষ্যতে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে টানা তিনবার ও বাংলাদেশের ইতিহাসে চারবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কী কী করেছি তা বলার অপেক্ষা রাখে না, বরং ভবিষ্যতে মানুষকে আরও বেশি সেবা দেয়ার জন্য, মানুষের করণীয় বিষয় নিয়ে আরও বেশি আলোচনা করতে চাই। তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি, সেটা ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে খুব স্বাভাবিক মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা, উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছাড়া উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংস্থার প্রধানরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।