স্টাফ রিপোর্টার : একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দ-িতদের মধ্যে আছেন পুলিশের ৩ জন সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। কর্তব্যে অবহেলাসহ নানা অভিযোগে দুই জনের দুই বছর এবং এক জনের ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়েছে।
গতকাল বুধবার ঢাকার ১নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন যে ৪৯ জনের সাজা ঘোষণা করেন তাদের মধ্যে আছেন শহুদুল হক, মোহাম্মদ আশরাফুল হুদা ও খোদাবঙ্ চৌধুরী। তারা সবাই পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন। মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন বাদ বাকি ১১ জনকে দেয়া হয়েছে নানা মেয়াদের দণ্ড । এদের মধ্যে পুলিশের ৩ জন সাবেক প্রধানের সাজা বাহিনীটি ইতিহাসে নজিরবিহীন।
আর বিষয়টি নিয়ে পুলিশে নানা প্রতিক্রিয়াও আছে। যদিও বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা সাজা পেয়েছেন তারা ব্যক্তিগত দায়ে দ-িত হয়েছেন। এই দায় পুলিশের হতে পারে না। সূত্র জানায়, গ্রেনেড হামলার সময় পুলিশ প্রধান ছিলেন শহুদুল হক। কারাগারে আছেন তিনি। দুই বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার। গ্রেনেড হামলা হওয়ার পর শহুদুলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাষ্ট্রপক্ষ। কারণ হামলার পর ঘটনাস্থল একবারও পরিদর্শন করেননি তিনি।
শহুদুল হক এক সময় সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর শহুদুলকে পুলিশ প্রধানের পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। বিএনপি সরকারের সময় পুলিশ প্রধান পদে খুব বেশি দিন থাকতে পারেননি তিনি। আদালত অবমাননার দায়ে তাকে সে পদ ছাড়তে হয়েছিল। ২০০৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ এক বছর ৮ মাস পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
গ্রেনেড হামলার সময় ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন আশরাফুল হুদা। তাকে দেয়া হয়েছে দুই বছরের কারাদণ্ড । ২০০৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত অর্থাৎ ৪ মাসেরও কম সময় পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
আরেক সাবেক পুলিশ প্রধান খোদাবঙ্ চৌধুরীর সাজা হয়েছে বেশি, ৩ বছরের কারাদণ্ড । তিনি গ্রেনেড হামলার সময় অতিরিক্ত পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। পরে হন পুলিশ প্রধান।
পুলিশের ৩ আইজিপির একই সঙ্গে সাজা পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা ও নাজমুল হুদা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক রুহুল আমিন বলেন, কোনও ব্যক্তির দায় সমগ্র পুলিশ বাহিনী নিবে না। কেউ অপরাধ করলে তার বিচার হবেই। আর এই রায়ের প্রভাব পুলিশের ওপরেও পড়বে না।