আজ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়

21 agust

স্টাফ রিপোর্টার : আজ বুধবার ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা পৃথক মামলার রায় ঘোষণা দিন ধার্য রয়েছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নজীরবিহীন গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আনা পৃথক মামলার বিচার শেষ হয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর।

রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে একুশে আগস্টের ঐ ঘটনায় আনা পৃথক মামলায় একই সঙ্গে বিচার অনুষ্ঠিত হয়।
২১ আগস্ট

ভয়াবহ, পৈশাচিক, নারকীয় ও বর্বরোচিত এই গ্রেনেড হামলার বিচারের জন্য দেশবাসীর প্রতীক্ষার অবসান হবে এই রায় ঘোষণার মাধ্যমে। ঐ ঘৃণ্য হামলার পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিলল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হয়। আহত হয় ৫ শতাধিক। আসামিদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার

বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর অন্যতম। সরকারি মদদে মামলা ভিন্নখাতে নেয়া, তদন্ত ও সাক্ষ্যগ্রহণের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অবশেষে রায় হতে যাচ্ছে জঘন্যতম বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার। অনেক আহত এখনো শরীরে স্পিস্নন্টার নিয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। আজও চোখের পানি ফেলেন নিহতদের স্বজনরা। বিচারের জন্য তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে আজ বুধবার।

রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান কেঁৗসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সন্দেহের ঊধর্ে্ব থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য ২১ আগস্ট হামলা ইতিহাসের সবচাইতে নৃশংস, জঘন্যতম ও বর্বরোচিত হামলা। নিরস্ত্র মানুষের ওপর আর্জেস গ্রেনেডের মতো সমরাস্ত্র ব্যবহার এ উপমহাদেশে আর নেই। তারা এ হামলার মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল।

সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, আমাদের প্রত্যাশা আইন অনুযায়ি আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদ- হবে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আজ বুধবার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য রয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি ঐ দিনই এই মামলার বিচারের প্রতীক্ষার অবসান হবে। তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার ছত্রছায়ায় হাওয়া ভবনে জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপর হামলার ষড়যন্ত্র হয়। চালানো হয় নারকীয় হামলা। এমন নারকীয় ঘটনা বিশ্বের কোথাও ঘটেনি। ক্ষমতায় থেকে বিরোধীদলীয় নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা কেউ ভাবতেও পারে না।

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের মক্কেলরা খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। ২১ আগস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে ৩ জন আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ৩ আসামি হলেন, জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ সাহেদুল আলম বিপুল। এখন ৪৯ আসামির বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জঙ্গি তাজউদ্দিনসহ এখনো ১৮ জন পলাতক। বিএনপি নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন। এর মধ্যে ঐ ঘটনায় হত্যা, হত্যা চেষ্টা, ষড়যন্ত্র, ঘটনায় সহায়তাসহ বিভিন্ন অভিযোগে একটি মামলা যাতে বর্তমানে আসামি সংখ্যা মোট ৪৯ জন। একই ঘটনায় ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনে (সংশোধনী-২০০২) অপর একটি মামলায় আসামি সংখ্যা ৩৮জন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ঐ নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতাকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পত্নী আইভি রহমান।

তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচ- শব্দে তার শ্রবণশক্তিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post