হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সদর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী হালুয়াঘাট থানার শাকুয়াই গ্রামের রুসমত আলীর পুত্র দুলাল মিয়া। অভিযোগে প্রকাশ, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ১২.৫০ শতাংশ জমি নিয়ে অভিযোগকারীর চাচা উসমান আলীর সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে একে অপরের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একাদিক মামলা মোকাদ্দমা চলমান রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ দখলীয় জমিতে দোকান ঘর ও বসতঘর নির্মাণ করে স্ত্রী সন্তানাদি নিয়ে শান্তিতে বসবাস করছেন। গত ১০ জুন প্রতিপক্ষের একটি মামলায় বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিতে গেলে একই গ্রামের ফুলমামুদ এর পুত্র আব্দুল মোতালেব,আবুল কাসেম, মৃত আজমত আলীর পুত্র উসমান আলীগং সহ অজ্ঞাত নামা আরো ১০/১২জন দোকান ঘর ও বসতঘর ভাংচুর প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ সময় তার মা ও বোনকে মারধর করে আহত করে।স্থানীয়দের মাধ্যমে মুঠোফোনে খবর পেয়ে নিজ বাড়িতে আসিয়া স্থানীয়দের নিকট বিস্তারিত জেনে ভাংচুরকারীদের নামে হালুয়াঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযোগটি এফ আই আর হিসেবে নথি ভুক্ত না করায় ঘটনার ৪ দিন পর ১৪ জুন ময়মনসিংহ দ্রুত বিচার আদালতে একটি মোকাদ্দমা দায়ের করেন। যার নং- ৭৮। মোকাদ্দমাটি বিজ্ঞ আদালত হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার অনুকূলে ১৮৯ নং স্বারকে গত ১২ আগষ্ট বিজ্ঞ আদালতে বিবাদীদের নামে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। উক্ত অভিযোগ পত্রের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে তিনি নারাজি দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অনুকূলে মামলাটি হস্তান্তরের জন্য আদালতে আবেদন করেন। যার শুনানির ধার্য তারিখ ২২ অক্টোবর। বিবাদীদের নামে দ্রুত বিচার আদালতে মামলা দায়েরের প্রায় ১৫ দিন পর বিবাদী আব্দুল মোতালেবগং অভিযোগকারীর বসতবাড়ী ও দোকানঘর নিজের দাবি করিয়া দুলাল মিয়াগংদের নামে ময়মনসিংহ দ্রুত বিচার আদালতে একটি মিথ্যা মোকাদ্দমা দায়ের করেন। যাহার নং-৮৫।
উক্ত মামলাটি বিজ্ঞ আদালত ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করলে। ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সাব-ইন্সপেক্টর মহসিন হোসেন(খোকন) মিথ্যা মামলাটির সঠিকভাবে তদন্ত গ্রহণ না করে ১০ জন সাক্ষীর মাধ্যমে গত ২৫ সেপ্টেম্বার স্মারক নং ১৮২৮ ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক পিপিএম দ্রুত বিচার আদালতে ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের পর ২জন সাক্ষী মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান না করার জন্য নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করেন। ৪ জন সাক্ষী এফিডেভিট করার জন্য প্রস্তত আছে। জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে সারাদেশব্যাপী সুপরিচিত পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য যার রয়েছে দেশব্যাপী সুনাম। সেখানে কতিপয় ব্যক্তির অসৎ উদ্দেশ্যের কাছে আমি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ন্যায় বিচারের আশা ও পূর্ণতদন্তের দাবী জানিয়ে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংষিস্নষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে দুলাল মিয়া বলেন, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমিটি বেদখল করার জন্য বিবাদীগণ উঠে পড়ে লেগেছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের ফাঁসানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তিনি ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় পিবিআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে আব্দুল মোতালেবগং এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক পিপিএম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তিনি অবগত নন। এ বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সদর দপ্তরের ডি আই জি বনজ কুমার মজুমদার এ প্রতিবেদককে বলেন, অভিযোগটি পেয়েছেন তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।