Kbdnews ডেস্ক : তুরস্কে সৌদি দূতাবাসে খুন হওয়া বিশিষ্ট সাংবাদিক জামাল খাশোগির ছেলেকে ফোন করে সমবেদনা জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ফোন দিয়েছেন বাদশাহ সালমানও। সোমবার সৌদি সরকারকে উদ্ধৃত করে এই তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
২ অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনসুলেট ভবনে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন সৌদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। গত শুক্রবার মধ্যরাতে প্রথমবারের মতো সৌদি আরব সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে। তবে তারা দাবি করে, খাশোগিকে হত্যার উদ্দেশ্য তাদের ছিল না। খাশোগি কনসুলেট ভবনের ভেতরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন এবং ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। সৌদি আরব বলছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়াই ১৫ সদস্যের গোয়েন্দা স্কোয়াড নীতিবর্জিত অবস্থান থেকে খাশোগিকে খুন করেছেন। হত্যাকা-ের সাথে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে দেশটি।
তবে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান গোষণা দিয়েছেন যে খাশোগির হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন করা হবেই। আজ মঙ্গলবার রিয়াদে সৌদি যুবরাজের নেতৃত্বে জাঁকজমকপূর্ণ বিনিয়োগ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান তার দেশে ব্যাপকভাবে বিদেশি পুঁজি আকৃষ্ট করার জন্য ঐ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। ভবিষ্যতে তেলের ওপর সৌদি আরবের নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যেই মূলত আয়োজন। তবে তুরস্কের ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি কনসুলেটে সৌদি সাংবাদিক খাশোগির হত্যাকা-কে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশ ও বড় বড় প্রতিষ্ঠান একে একে সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
বারবার অস্বীকার করে আসলেও শুক্রবার খাশোগির হত্যাকা- সম্পর্কে স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় জড়িত ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে বলেও দাবি তাদের। তবে ধারণা করা হচ্ছে এই ঘটনার সঙ্গে যুবরাজের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তুর্কি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, সৌদি আরব থেকে ১৫ সদস্যের একটি দল তুরস্কে নিযুক্ত কনসুলেটে গিয়েছিলেন। সেখানেই খাশোগির জন্য অপেক্ষা করেন তারা। এরপর তাকে হত্যা করে গুম করা হয়।
সরকার সমর্থিত একটি তুর্কি সংবাদমাধ্যম জানায়, যুবরাজের দেহরক্ষীদের একজন খাশোগির মৃত্যুর দিন চারবার কনসুলেটে ফোন করেছিলেন। তবে সেখানে কোনও সূত্র নিশ্চিত করা হয়নি। এছাড়া কনসুলেটের চালকসহ আরও ২০ জন জবানবন্দি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসিত জামাল খাশোগি সৌদি সরকারের কঠোর সমালোচক ছিলেন। বিশেষ করে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার পরিকল্পনার বিরোধী ছিলেন তিনি। এক সময় সংবাদপত্র আল ওয়াতানের সম্পাদক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন খাশোগি। কাজ করেছেন একটি সৌদি টেলিভিশন চ্যানেলেও। ওয়াশিংটন পোস্ট ছাড়াও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানগুলোতে কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করতেন খাশোগি। সৌদি রাজপরিবারের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।