আমিরুল ইসলাম অল্ডাম : গাংনীর চৌগাছা পশ্চিমপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আব্দুল খালেকের অজান্তে সাক্ষর জাল করে ভূঁয়া ভাউচারে স্লিপের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চৌগাছা পশ্চিমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আবেদা খাতুনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সরেজমিনে গিয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। চৌগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা, উন্নয়ন পরিকল্পনা, সংস্কার ইত্যাদি কার্যক্রমের বিপরীতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বিগত ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ৪০ হাজার টাকা করে ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান, উক্ত টাকার মধ্যে সরকারী ৬ হাজার টাকা ভ্যাট বাদে বাকী ৭৪ হাজার টাকার নামমাত্র কাজ করে ভূঁয়া ভাউচার দেখিয়ে বেশীরভাগ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এছাড়াও দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ প্রধান শিক্ষিকার পিতা একটানা সভাপতি হিসাবে নানা অনিয়ম দুর্নীতি করে স্কুল চালিয়েছেন। নতুনভাবে মনোনিত সভাপতির কোন তোয়াক্কা না করে প্রধান শিক্ষিকা একাই মনগড়া কাজ কর্ম করে থাকেন। পারিবারিক প্রভাব খাটিয়ে যা খুশি তাই করে থাকে। নিয়মিত সকুলে উপসি’ত থাকে না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আবেদা খাতুন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান। ২০১৭ ইং সালের বরাদ্দকৃত ৪০ হাজার টাকায় স্কুল আঙ্গিনায় মাটি ভরাট করা হয়েছে বলে জানান। চলতি বছরের টাকা দিয়ে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ক্রয়,৭টি ফ্যান ক্রয়,৪৭টি টিফিন বক্স ক্রয় ইত্যাদি খাতে খরচ করা হয়েছে বলে জানান। এসব ক্রয়ের ভাউচার দেখলে চাইলে অনেকগুলো ভূঁয়া ভাউচার সভাপতির সাক্ষর জাল করে শিক্ষা অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও স্লিপের টাকা দিয়ে নানা কর্মকান্ড করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও কোন রেজুলেশন করা হয়নি। গত মে মাসে সভাপতিকে আড়াল করে স’ানীয় এতিম খানার খাদেম রইচউদ্দীনকে সভাপতি সাজিয়ে একটি ভূঁয়া রেজুলেশন দাখিল করা হয়েছে। রইচউদ্দীনের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আমিতো কিছুই জানিনা। এই সাক্ষর আমার নয়, আমিতো কখনও এরকম সাক্ষর করি নাই। প্রধান শিক্ষক নিজে এই ভূঁয়া রেজুলেশনে ৫ জনের জাল সাক্ষর করে খরচের ভাউচার অনুমোদন করেছেন। দেখা গেছে, ১০-১২ টি ভাউচারে সভাপতির সাক্ষর জাল করে সিল সাক্ষর দেয়া হয়েছে। রেজুলেশন খাতাটি দেখতে চাইলে প্রধান শিক্ষক খাতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সরেজমিনে প্রমাণ করতে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও ৩ নং পৌর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল খালেককে এই অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে জানালো হলে তিনি বলেন,আমাকে না জানিয়ে স্কুলের সব কাজ হেড মাষ্টার করে থাকে।কোন মিটিং বা রেজুলেশন করে না।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার এহসানুল হাবীব জানান, সভাপতির অগোচরে বিদ্যালয়ের কোন উন্নয়ন বা সংস্কার কার্যক্রম করা ঠিক হয়নি। এরকম অনিয়ম বা দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস’া নেয়া হবে।