যুদ্ধাপরাধের মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ১ জনের ২০ বছরের কারাদণ্ড

 

স্টাফ রিপোর্টার   :  মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও এক আসামিকে কারাদণ্ড প্রদান করে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন।

আসামী ৪ জন হলেন- আমির আহম্মেদ ওরফে রাজাকার আমির আলী, জয়নাল আবদিন, আব্দুল কুদ্দুস এবং আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুর। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামি হলেন- আমির আহম্মেদ ওরফে রাজাকার আমির আলী, জয়নাল আবদিন এবং আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুর। আসামি আব্দুল কুদ্দুসকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। প্রসিকিউটর

জাহিদ ইমাম সাংবাদিকদের একথা জানান।

তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এ রায়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৩১তম এ মামলায় নোয়াখালীর সুধারামের আমির আলীসহ চার জনের বিরুদ্ধে যে কোনো দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রাখা হয়। ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

গত ১০ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ তথা যুদ্ধপরাধের মামলায় মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ২ জনকে ফাঁসির আদেশ ও ৩ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে ৩০তম মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়। গতকাল ৩১তম রায় ঘোষণা করা হলো।

এদিকে যুদ্ধাপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আনা জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম ও মাওলানা আবদুস সুবহান এবং জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মো. কায়সারের আপিল মামলা শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে এটিএম আজহারকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেছিল ট্রাইব্যুনাল। ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাজাকার কমান্ডার ও শান্তি কমিটির সদস্য সৈয়দ মো. কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলায় শান্তি কমিটির নেতা মাওলানা সুবহানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল। আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত এই ৩ আসামিই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করে।

এ পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিল ও আপিল রায়ের রিভিউতে সাতটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি রায়ের পর জামায়াতের প্রাক্তন আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, প্রাক্তন ২ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, জামায়াতের প্রাক্তন নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আপিল ও আপিল রায়ের রিভিউতেও জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এর আগে ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছিল। আরো বেশক’টি মামলা আপিলে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এটর্নি জেনারেল কার্যালয় জানায়, পর্যায়ক্রমে এসব মামলার শুনানি ও নিষ্পন্ন হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post