স্টাফ রিপোর্টার : গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনাটি বাংলাদেশের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট ছিল বলে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ঐ ঘটনার পর আমরা অনেকটা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তবে খুব দ্রুতই পরিস্থিতি রিকভার করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী জিরো টলারেন্স নীতিতে যে যার জায়গা থেকে সহযোগিতা করেছে। সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা গেছে। এরপর ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের মধ্যে চার জনের স্বজনদের সমবেদনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঞ্চের সামনে দর্শক সারিতে গিয়ে সেখানে বসা নিহতদের স্বজনদের হাতে স্মারক তুলে দেন। নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনের পক্ষে তার বড় ভাই জারেফ আইয়াজ হোসেন, ইসরাত জাহান আখনের পক্ষে তার বড় ভাই আলী হায়দার আখন, অবিন্তা কবিরের পক্ষে তার মামা তানভীর আহমেদ ও ভারতের নাগরিক তারিশি জৈনের পক্ষে তার চাচা নিরেন সরকার এই সমবেদনা স্মারক গ্রহণ করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে একের পর এক জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এসব অভিযানে ভেঙে গেছে সব জঙ্গি নেটওয়ার্ক। এখন জঙ্গিরা কার্যত পঙ্গু হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেমে নেই। জঙ্গি-সন্ত্রাসী বিরোধী লড়াই এখনও অব্যাহত রয়েছে।
নিহত জঙ্গিদের লাশ তাদের পরিবার নিতে আসেনি জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, হলি আর্টিজানে নিহত পাঁচ জঙ্গির লাশ আমরা কয়েক মাস সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম। কিন্তু পরিবার তাদের লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কেউ আসেনি বরং তারা জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
অনুষ্ঠানে ডিএমপি’র কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম ও র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মোখলেসুর রহমান, র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ শামসুর রহমান, ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান, জাতিসংঘের বিশেষ দূত ডেভিড ডোনাল্ড, জাপানি রাষ্ট্রদূত হিরো ইকো ইজমি প্রমুখ। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।