আবু জাফর : ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করায় সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন শুল্ক ও রেয়াত প্রত্যর্পণ পরিদফতরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শহীদ খান। এছাড়া তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদক তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
সূত্র জানায়, মো. শহীদ খান বর্তমান শুল্ক ও রেয়াত প্রত্যর্পণ পরিদফতরের একজন রাজস্ব কর্মকর্তা। ৩২ তোপখানা রোড ৬ষ্ঠ তলা ঢাকা তার কর্মস্থল। তিনি বর্তমানে ১/বি জোয়ারসাহারা রোড নং ১৬ নিকুঞ্জ-২, থানা খিলক্ষেত, ঢাকা নিজ বাড়িতে প্রথম স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। তাছাড়াও তার দ্বিতীয় স্ত্রী হেলেনা বেগমের নামে মোহাম্মদপুর চাঁদ হাউজিং-এ ৩ কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এছাড়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মার্কেটে ২০১ নং একটি দোকান রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। শহীদ খানের পরিবারের সদস্যদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে ২টি বিলাসবহুল গাড়ি। যার মূল্য ৩৬ লাখ টাকা। নিজ গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। যা নিজ ও প্রথম স্ত্রী মমতাজ এবং সন্তানদের নামে। শহীদ খানের তৃতীয় স্ত্রী রানী বালা দাস। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রীর সাথে তার সম্পর্ক নেই। ৪র্থ স্ত্রী হাসিনা বেগমকে ফাঁদে ফেলে কৌশলে বিয়ে করেন। গত কয়েক মাস আগে তার সাথেও সম্পর্ক ছিন্ন হয়। হাসিনা বেগম শহীদ খানের নানা অপকর্ম ও অনৈতিক কর্মকা-ের কারণে স্বামী শহীদ খানের বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলাটি চলমান। সর্বশেষ ৫ম স্ত্রী রুমার সাথে নিকুঞ্জ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। সূত্র জানায়, শহীদ খানের ৪র্থ স্ত্রী হাসিনা বেগমকে বিভিন্ন সময়ে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। একপর্যায়ে হাসিনা বেগমের কাছে শহীদ খান ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। মোটা অংকের এত টাকা হাসিনা দিতে না পারার কারণে গত কয়েক মাস আগে তাকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেয় শহীদ খান। এ ঘটনার পর হাসিনা বেগম বাদী হয়ে আদালতে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এছাড়া তিনি বাদী হয়ে দুদক চেয়ারম্যান ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে তিনি বলেছেন, শহীদ খান এ পর্যন্ত ৫টি বিয়ে করেছেন। প্রত্যেক স্ত্রীকে আলাদাভাবে রাখলেও তাকে কোনো প্রকার সহায়তা করছেন না। বরং তাকে কারণে-অকারণে মারধর করে বাসা থেকে একাধিকবার বের করে দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক জিডি করা হয়েছে। এসব অভিযোগের কারণে শহীদ খান তার কর্মস্থল থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। শহীদ খান তার ৪র্থ স্ত্রী হাসিনাকে মারার জন্য একাধিকবার তার ভাড়াটিয়া বাহিনী দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। হাসিনা বেগম জানিয়েছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তিনি মামলা করার পর তাকে হত্যা করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামনে শহীদ খানের ভাড়াটিয়া বাহিনী দিয়ে তাকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি রমনা থানায় একটি জিডি করেন। তিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। তাকে যেকোনো সময় শহীদ খানের বাহিনী দিয়ে তাকে হত্যা বা অপহরণ করতে পারে। তিনি আইনি সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রীর কাছে।