বি এম রাকিব হাসান, খুলনা ব্যুরো: খুলনায় মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে সমন্বিত সবজি চাষে ভাগ্য খুলেছে কৃষকদের। সবজি বিক্রয় হচ্ছে ড়্গেতে। অল্প সময়ে স্বল্প জমিতে এ চাষে বিপব দেখা দেওয়ায় বেশির ভাগ কৃষকরাই মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে সবজি চাষে ঝুকে পড়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না মর্মে উপজেলা কৃষি অফিসে কোমর বেধে নেমেছে কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়ন। খুলনার বিভিন্ন উপজেলায় খালে-বিলে কৃষাণীর চালে মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে শোভা পাচ্ছে লাউ, ভেন্টি, করলা, মিষ্টি কুমড়া, উচ্ছে, ঝিঙে, বরবটি, পলা, শিম, কুমড়া, পুইশাক, লাল শাক, পেপে, শসা, খিরাই সহ নানাবিধ সবজি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বন্যা কবলিত জলাবদ্ধতার করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পেতে খুলনার বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকদের চেষ্টার যেন লেশমাত্র কমতি নেই। অনাবাদি আর পতিত জমিতে ভেড়ি নির্মাণ পূর্বক মাছ চাষ আর ভেড়ির মাচায় সবজি চাষ। দেখতেও নয়নাভিরাম মনোমুগ্ধকর এক প্রকৃতি। খুলনার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা দীর্ঘদিন খাদ্য সংকটে ভুগে এখন নিজেরাই নিজেদের পুষ্টি ও খাদ্য তৈরী করছে। বিশেষত: খুলনার তালা উপজেলার মিঠাবাড়ি পাচপাড়া, সরম্নলিয়া, ধানদিয়া, নগরঘাটা, তৈলকুপি, যুগিপুকুরিয়া, মাগুরা, মাদরা, কৈ খালি, শুকতিয়া, টিকারামপুর, বাগমারা, বালিয়াদাহ, খেশরা, হরিহরনগর, গাছা, মুড়াগাছা সহ একাধিক এলাকার পতিত জমিতে এখন সবজি আর মাছের বিপস্নব। কৃষকরা এক ফসলি জমিতে এখন বহু ফসলি জমিতে রম্নপানত্মরিত করেছে। আরও জানা যায়, বর্তমান দেশে ও বিদেশে সবজির ব্যাপক চাহিদা হওয়ায় কৃষকরা দামও যেমন বেশি পাচ্ছে তেমনি কর্মসংস’ানের উৎস সৃষ্টি হচ্ছে। একদিকে মৎস্য ঘেরের ভেড়ির মাচায় সবজি চাষ হলে মাছের ঘেরে চোরের উপদ্রব যেন থাকেনা বললেই চলে। সবজি তে থেকে উঠিয়ে বিক্রির জন্য কৃষকদের এখন হাট-বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা তে থেকে সবজি ক্রয় করছে। অনেক এলাকায় মৎস্য ঘেরের পাশেই ক্রয় বিক্রয়ের জন্য গড়ে উঠেছে আড়তদারি প্রতিষ্ঠান। দুর দুরানেত্মর ব্যবসায়ীরা তে থেকেই টাটকা সবজি ক্রয় করে দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করছে। এ বিষয়ে কথা হয় কয়রার চাষি আবুল হোসেন’র সাথে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন মাছ চাষ করে আসলেও লাভবান হতে পারেননি। গত কয়েক বছর যাবত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে এ চাষ করে লাভের মুখ দেখেছে। মাত্র ১ বিঘা জমির মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে সবজি চাষ করতে সর্বোচ্চ খরচ ৩ হাজার টাকা। শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিনের ৩ মাসে একটি ঘেরের ভেড়ি থেকে কৃষকরা সবজি বিক্রয় করছেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাই এক কৃষককে দেখে অন্য কৃষক উদ্ধুদ্ধ হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুল হক জানিয়েছেন, তালা উপজেলার কৃষকরা মানদাতা আমলে চাষাবাদ পদ্ধতি ছেড়ে দিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করাই শুধুমাত্র সবজিতে নয় ধান, আখ, পাট সহ বিভিন্ন অর্থকরী ফসল উৎপাদনে বিপস্নব ঘটাচ্ছে।