স্টাফরিপোটার: মেহেরপুরের লিচুচাষীরা বিপাকে পড়েছে। বাজারে উঠতে শুরু করেছে মধু মাসের মধুফল লিচু। দাম চড়া থাকলেও হাঁসি নেই মেহেরপুরের কৃষকের মুখে। বৈরি আবহাওয়ায় লিচু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে শংশয়। তবে গুতগত মান ঠিক রাখার জন্য আরোও কয়েকদিন পর লিচু সংগ্রহের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
বাগানের রাশি রাশি গাছে ঝুলছে রশালো ফল লিচু। লাভজনক হওয়ায় দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের জেলা মেহেরপুরে বাড়ছে লিচুর আবাদ। যদিও চলতি মৌসূমে বেশ কয়েকবার কালবৈশাখীর ঝড় ও গ্রীষ্মের খরতাপে নষ্ট হয়েছে বাগানের লিচু। চাষিরা বলছেন, বাজারে ভাল দাম থাকলেও ফলন বিপর্যয় দেখা দেওয়ায় রয়েছে কিছুটা শংকা। উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। আটি, বোম্বায়, মোজাফ্ফর, চাইনা থ্রীসহ বিভিন্ন জাতের লিচু চাষ হয়ে থাকে এ জেলায়। যা সরবরাহ করা হয় রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। প্রতিদিনই ৪ থেকে ৫ ট্রাক লিচু চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স’ানে। কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব মতে চলতি মৌসূমে জেলায় ৫৮৯ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। যা থেকে ৫ হাজার মেট্রিকটন লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
মেহেরপুর শহরের মন্ডলপাড়ার লিচু চাষি কালু জানান, বছরের শুরুতেই গাছে ভাল মুকুল এসেছিল। কিন’ হঠাৎ করেই আবহাওয়া তারতম্যের কারণে নষ্ট হয়ে যায় গাছের মুকুল। তারপরও ভাল ফলনের আশায় বুক বেধেছিল কৃষকেরা। কিন’ দফায় দফায় কালবৈশাখীর ঝড়ে ঝরে যায় অনেক লিচু। তারপরও গ্রীষ্মের খরতাপে পুড়ে ফেটে যাচ্ছে লিচু। বাজারে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা হাজার দরে লিচু বিক্রি হচ্ছে। তবে ফলন বিপর্যয় কারণে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের লিচু চাষি একরামূল জানান, তার এবার ১২ বিঘা জমিতে লিচুর আবাদ রয়েছে। ঝড়ে লিচু নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি এখন লিচু পুড়ে ফেটে যাচ্ছে। নিয়মিত সেচ ও কিটনাশক প্রয়োগ করেও কোন কাজ হচ্ছে না। এদিকে সার, বিষসহ শ্রমিকের মুজুরি বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরছ বেড়েছে দ্বীগুন। ফলে খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তবে লাভবান হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স’ান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা।
ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী জানান, সবার আগে বাজারে উঠতে শুরম্ন করে মেহেরপুরের লিচু। ফলে চাহিদাও থাকে বেশ। লিচু কিনে তারা দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করছেন। এতে লাভবানও হচ্ছেন তারা।
কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এস.এম মোসত্মাাফিজুর রহমান জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগ, মইক্রোনিউট্রেনটের অভাব ও পানির তারতম্যের কারণে লিচু ফেটে যেতে পারে। এজন্য সুষমাত্রায় সার ও নিয়মিত সেচ প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষকদের। আর লিচুর গুনগত মান ধরে রাখার জন্য আরোও কয়েকদিন পর লিচু বাজারজাত করার পরমর্শ দিচ্ছেন তিনি। কারণ এতে লিচুর আকৃতিও বড় হবে। মিষ্টতাও বাড়বে বলে মত তার।