বি এম রাকিব হাসান, খুলনা ব্যুরো: মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও মাঝপথে ব্লাষ্ট ও অতিবৃষ্টিতে খুলনায় বোরো উৎপাদন হোঁচট খেয়েছে। ব্লাষ্ট নামক ছত্রাক রোগের কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে জেলার ৫ হাজার কৃষক। রোগ বালাই না হলেও শুধুমাত্র ব্লাষ্ট ও অতিবৃষ্টির কারণে জেলায় ৪শ’ ৮০ মেট্রিক টন বোরো কম উৎপাদন হয়েছে। মে মাসের প্রথম দিকে বোরোর বাজার চড়া হলেও এখন নিম্নমুখী।
কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, মৌসুমে মহানগরী সহ ৯ উপজেলায় ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হাজার ৬শ’ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ১শ’ ৮৬ মেট্রিক টন। এই সূত্র জানান, মার্চ মাসের শেষ দিকে বৃষ্টিপাতের কারণে ডুমুরিয়া, ফুলতলা, তেরখাদা ও পাইকগাছা উপজেলায় ব্লাষ্ট নামক ছত্রাক আক্রমন করে। আক্রান- জমির পরিমান ৮শ’২১ হেক্টর।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক নিত্য রঞ্জন বিশ্বাস জানান, রাতে তাপমাত্রা কম এবং মাছের ঘেরে অতিরিক্ত সার ব্যবহারের ফলে ব্লাষ্ট নামক ছত্রাক দেখা দেয়। খুলনার উল্লিখিত উপজেলায় ছত্রাকের কারণ জানতে ধান গবেষণা ইনিষ্টিটিউটের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেন। ব্রি-৬১ ও ব্রি ২৮ জাতের ধানে ব্লাষ্ট আক্রমন করে। দক্ষিণাঞ্চলের আক্রান- উপজেলাগুলোর মধ্যে ছিল সাতক্ষীরার তালা, আশাশুনি, নড়াইলের কালিয়া, যশোরের কেশবপুর, অভয়নগর, বাগেরহাটের কচুয়া ও মোড়েলগঞ্জ।
কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর, খুলনার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল লতিফ জানান, অতিবৃষ্টির কারণে ফুলতলা, তেরখাদা, রূপসা উপজেলার কৃষকরা উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারেনি। পাশাপাশি ব্লাষ্টের কারণে ৪শ’ ৮০ মেট্রিক টন উৎপাদন কম হয়েছে।
তেরখাদার উপজেলার কৃষি সমপ্রসারণ কর্মকর্তা কাজী শাহ নেওয়াজ জানান, ব্লাষ্টে ৬১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস- হয়। এছাড়া অতিবৃষ্টিতে ছাগলাদাহ, বারাসাত, সাচিদহ ও আজগড়া ইউনিয়নে ২৯শ’ হেক্টর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস- হয়। তিনি জানান, মে মাসের শুরুতে প্রতি মন বোরোর ১ হাজার ৫০ টাকা দাম থাকলেও এখন ৮শ’ ৩০টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গেল বছর জেলায় ৫১ হাজার ১শ’ ২০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ১৬ হাজার ১৭ মেট্রিক টন বোরো উৎপাদন হয়।
বি এম রাকিব হাসান,
খুলনা ব্যুরো: