kbdnews ডেস্ক: দেশে বর্তমানে চালের কোনো ঘাটতি নেই। তারপরও দফায় দফায় বেড়েই চালের দাম। মূলত অসাধু ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের কারসাজিতেই চালের দাম বাড়ছে। তারা বেশি মুনাফার লোভে ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়েই চলেছে। যদিও কিছুদিন আগে ব্যবসায়িরা সরকারকে কথা দিয়েছিলো চালের দাম আর বাড়ানো হবে না। কিন্তু স্বল্পসময়ের মধ্যেই ওই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তারা চালের দাম বাড়িয়ে চলেছে। বাজার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বেশির ভাগ চালের দামই কেজিতে এক-দুই টাকা বেড়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশ। আর মোটা চালই সারাদেশের সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি খায়। পাইকারি বাজাওে সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই কেজিপ্রতি চাল এক-দুই টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। বলা হচ্ছে মিলাররা বাড়তি দামে চাল বিক্রি করায় চালের দাম বাড়ছে। নতুন মৌসুমের আগে আগে চালের দাম বাড়া একটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বৈশাখের শুরু বা মাঝামাঝিতে বোরো ধান কাটা শুরু হলে আবার চালের দাম কমে আসবে। তখন কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে। অথচ গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি চালের দাম বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সাথে খাদ্যমন্ত্রী বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে তিনি জানানো হয়েছিল, চালকল মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান-চালের সংগ্রহ রয়েছে। তারা কথা দিয়েছেন বৈশাখে নতুন ধান ওঠার আগে আর চালের দাম বাড়াবে না। বরং নতুন ধান উঠলে চালের দাম আবার স্বাভাবিক হবে।
সূত্র জানায়, দেশের সব চালকল ও আড়তে ধান-চালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। নওগাঁওতে সব মিলিয়ে প্রায় ১২শ’র মতো চলকল, ৭০টি অটোমেটেড রাইস মিল ও দেড় শতাধিক হাসকিং মিল। ওসব মিলে ধান ও চালের যে মজুদ রয়েছে তা দিয়ে নতুন ধান ওঠার আগ পর্যন্ত চাহিদা মিটবে। আর কুষ্টিয়ার স্থানীয় চালকল মালিকরা ধান সঙ্কটের অজুহাত দেখিয়ে চালের দাম বাড়িয়ে চলেছে। সব ধরনের চালই মিলগেট থেকে পাইকারদের ৫০ পয়সা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ব্যবসায়িদের মতে, বৈশাখের প্রথম দিকেই বাজারে নতুন ধান আসবে। সেজন্য অনেকেই গত মৌসুমের মজুদ করা ধান থেকে চাল উৎপাদন করে দ্রুত গুদামগুলো ফাঁকা করছে। নতুন ধান ওঠার আগ পর্যন্ত এই সময়ে প্রতিবছরই দুই-এক টাকা করে দাম বাড়ে। নতুন ধান এলেই দাম আবার কমে আসবে।
এদিকে চালের দাম বাড়া প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও দাদা আটো রাইস মিলের মালিক জয়নাল আবেদীন জানান, চালের দাম বাড়ার বিষয়ে মিল মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ হবে না। কারণ কোনো কৃষকের কাছে এখন এক ছটাকও ধান নেই। নওগাঁ ও দিনাজপুরে ধানের মোকাম থেকে এক শ্রেণীর মৌসুমি মজুদদারের কাছ থেকে বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে। ফলে দাম বাড়াতে হচ্ছে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান জানান, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা যা করছে তা মোটেও সমীচীন নয়। কারণ ছাড়া যেভাবে চালের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ব্যবসায়ীরা কয়েক দিন আগেই খাদ্যমন্ত্রীর কাছে কথা দিয়েছিলেন চালের দাম আর বাড়াবেন না। কারণ কোনো সঙ্কট নেই।