রিদনি কোল্ড ষ্টো র কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা॥ মেহেরপুরের আলু চাষিরা বিপাকে

meherpur_ridmi_coldstore_pic-21

 মেহেরপুর: পঁচা আলু দেখছেন চাষিরা।

 কোল্ড ষ্টো র
রিদনি কোল্ড ষ্টো র কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা॥ মেহেরপুরের আলু চাষিরা বিপাকে

meherpur_ridmi_coldstore_pic-31

স্টাফরিপোটার: কর্তৃক্ষেক্ষর অব্যবস্থা পনার কারণে মেহেরপুরের রিদনি কোল্ড ষ্টোরে (হিমাগারে) আলু রেখে মারাত্বক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। আলু সংরক্ষনের জন্য কোল্ড ষ্টোরে আলু রাখেন মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা এলাকার চাষিরা। ইতোমধ্যেই কতৃপক্ষের অব্যবস’পনার কারণে আলুতে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে। যা রোপন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চাষিরা। আবার বাজারে বিক্রি করতে গেলেও লোকসানের মুখে পড়বেন তারা। তবে কতৃপক্ষের দাবি আলুতে বীজ অঙ্কুরিত হলেও তা রোপনে কোন সমস্যা হবে না।
মার্চ/এপ্রিল মাস থেকে বীজ ও খাবারের আলু সংরক্ষনের জন্য কোল্ড ষ্টোরে আলু রাখেন চাষিরা। ১৫নভেম্বর পর্যন্ত আলু রাখতে পারেন। এতে বস্তা প্রতি ৩৩০টাকা করে গুনতে হবে মালিকদের। মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের পাশে মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামে রিদনি কোল্ড ষ্টোরে এখনও ৫৬ হাজার বস্তা আলু রয়েছে। যার মধ্যে বীজের জন্য রাখা আছে ২০ হাজার বস্তা ও খাবার আলু ৩৬ হাজার বস্তা। যার বর্তমান মূল্য এক কোটি টাকার উপরে। আর ১৫-২০ দিন পর বীজের জন্য কোল্ড ষ্টোর থেকে

meherpur_ridmi_coldstore_pic-31

আলু বের করবেন চাষিরা। কিন্তু’ ইতোমধ্যে বীজ আলু অঙ্কুরিত হয়ে গেছে। আবার অনেক আলুতে পঁচন ধরেছে। বীজ আলু আরো ১৫ দিন থাকলে সেগুলো আর রোপন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন তারা। রোপন করলে কাঙ্খিত ফলন থেকে বঞ্চিত হবেন চাষি। আবার বাজারে বিক্রি করতে গেলেও ভাল দাম পাওয়া যাবে না। আবার খাবার আলু অঙ্কুরিত হবার কারণে ওজন কম যাবে। ফলে মোটা অংকের লেকাসান গুনতে হবে চাষিদের। জেনারেটর ছাড়া কোল্ড ষ্টোর চালু করা যায়না। অথচ রিদনি কোল্ড ষ্টোরটি ১০ বছর ধরে চলছে জেনারেটর ছাড়াই।
মেহেরপুর শহরের ফৌজদারি পাড়ার আলু চাষি ডাবলু জানান, তিনি এবার রিদনি কোল্ড ষ্টোরে বীজের জন্য ৪ হাজার বস্তা আলু রেখেছেন। শুরু থেকেই মালিককে চাপ দিয়ে আসছেন জেনারেটরের জন্য অথচ মালিক পক্ষ তাতে কর্ণপাত করেননি। গেল কয়েক মাসে পলস্নী বিদ্যুতে লোড শেডিংয়ের মাত্রা বেশি ছিল। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৭-৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। এখন তার অধিকাংশ আলুতে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে। তাপমাত্রার তারতম্য ও বস্তা উল্টে না দেওয়ার কারণে এমনটি ঘটেছে বলে অভিযোগ তার। কারণ প্রতি দুই মাস পরপর আলুর বস্তা উল্টে দিতে হয়। আরো ১৫ থেকে ২০ দিন থাকলে আরোও বেশি অঙ্কুরিত হবে। এ আলু রোপন করলে কাক্ষিত ফলন থেকে বঞ্চিত হতে হবে তাকে। ফলে জমিতে এ আলু রোপন করতে পারবেন না তিনি। আবার বাজারে বিক্রি করতে গেল বস্তা প্রতি ৩০০ টাকা করে লোকসান গুনতে হবে। এতে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা লোকসান গুনতে হবে তাকে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের বারিকুল ইসলাম লিজন জানান, রিদনি কোল্ড ষ্টোরে এলাকার চাষিদের ৫০ বস্তা থেকে শুরু করে এক হাজার বস্তা পর্যন্তা আলু রাখা আছে। কিন্তু তাদের আলুতেও বীজ অঙ্কুরিত হয়ে গেছে। এ আলু বাইরে বিক্রি করতে গেলেও ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।

meherpur_ridmi_coldstore_pic-21

রিদনি কোল্ড ষ্টোরের মালিক তপন জানান, পলস্নী বিদুৎ থেকে ভি.আই.পি লাইন নেয়া আছে। ফলে জেনারেটর থাকার প্রয়োজন নেই। একাধারে ৭ দিন বিদ্যুৎ না থাকলে সমস্যা হতে পারে। তবে আলুতে বীজ অঙ্কুরিত হলেও সমস্যা হবে না বলে দাবি তার।
জেনারেটর ছাড়া একটি কোল্ড ষ্টোর কিভাবে চলছে? এতে বিষ্ময় প্রকাশ করেছন জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার ড. আক্তারম্নজ্জামান। কারণ আলু বীজ সংরক্ষণ করতে হলে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার মধ্যে রাখতে হয়। অন্যথায় আলু নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। আর যে সমসত্ম বীজ আলু অঙ্কুরিত হয়েছে সেগুলো অল্প তামমাত্রায় রাখতে হবে। তাপমাত্রা বেশি হলে আলুর ভিতরের খাবার শেষ হয়ে যাবে। এতে বীজ দূর্বল হবে। রোপন করলে কাঙ্খিত ফলন থেকে বঞ্চিত হবেন চাষিরা।

Post a Comment

Previous Post Next Post