স্টাফ রিপোর্টার : বিআরটিএর শতকরা ৬০ শতাংশ এখন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে এবং বাকি ৪০ শতাংশ কতিপয় কর্মকর্তা ও দালালরা নিয়ন্ত্রণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বিআরটিএর কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিএর কার্যক্রমে জনগণ কতটুকু উপকৃত হয়েছে, কারণ জনগণ সুবিধা না পেলে সকল পরিশ্রম প-। তবে কাজ করতে গিয়ে রাজনৈতিক চাপের শিকার হলে সরাসরি আমাকে ফোন করবেন। আসন্ন ঈদের আগে যানজট নিরসনে ১৪টি পয়েন্টে ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তিন শিফটে কাজ করবে। বিআরটিএর অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে বাসায় গাড়ি রেখে বিআরটিএ থেকে ট্যাঙ্ টোকেন নিয়ে যাচ্ছে গাড়ির মালিকরা বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, বিআরটিএ কর্মকর্তারা গ্রাহকদের সাথে চামারের মতো ব্যবহার করেন। অনেক শিক্ষিত লোক বিআরটিএ অফিসে যান সেবা নিতে। কিন্তু বিআরটিএর অসাধু কর্মকর্তারা গ্রাহকদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করেন। এটি খুবই দুঃখজনক।
সেতুমন্ত্রীমন্ত্রী বলেন, দেনা-পাওনার বিনিময়ে বিআরটিএর কর্মকর্তাদের বদলি করতে রাজনৈতিকভাবে অনেকে আমার কাছে বলেন। কিন্তু অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে অসাধু কর্মকর্তাদের বদলি করা হলেও রাজনৈতিক তদবিরে তারা আবার ফিরে আসেন। বিআরটিএ নানা অগ্রগতির কথা শোনাচ্ছে। কিন্তু জনগণ তো এসব অগ্রগতি থেকে কোনো প্রকার লাভবান হচ্ছে না। মানুষ সেবা নিতে এসে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মানুষের প্রতি কোনো দায় নিয়ে কাজ করছে না এখানকার কর্মকর্তারা। দালালরা বিআরটিএর চেয়ার-টেবিল পর্যন্ত ব্যবহার করছে। কর্মকর্তাদের যোগসাজশ না থাকলে এমন হতে পারে না। ঢাকায় ভালো ও সৎ কর্মকর্তাদের খুঁজে আনতে হবে। তিনি বলেন, এই শহরের গাড়ির দিকে তাকানো যায় না। একটি রাজধানী শহরে এমন লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি, তা আর কোনো দেশে মিলবে না। বিশ্বের ১৪০টি দেশের জরিপে ঢাকার অবস্থান ১৩৯তম। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মডেল, অথচ ঢাকা নিয়ে সবাই হতাশ। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নসিমন, করিমন বন্ধ করতে কারখানায় হানা দিতে হবে। পথচারীরা যাতে ফুটপাত চলাচল করতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। হালকা যানবাহনগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। না হলে বড় বড় ফ্লাইওভার ও ইউলুপ কোনো সমাধান দিতে পারবে না। মোটরসাইকেলে দু’জনের বেশি ওঠা ও হেলমেট ছাড়া চলাচল না করা এবং শিশুদের সাথে নিয়ে চলাচল না করার জন্য আহ্বান জানান সড়ক পরিবহণমন্ত্রী।
তিনি বলেন, নম্বর প্লেট ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২৬ লাখ গাড়ির মধ্যে মাত্র ৯ লাখ গাড়ির নম্বর ডিজিটাল করা হয়েছে। কোনো বিধান নেই, নিয়ম নেই। অথচ অনিয়মের মধ্য দিয়েই লাখ লাখ গাড়ি চলাচল করছে।