স্টাফ রিপোর্টার : নৌপথে ভারতের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো ট্রানজিট কার্যক্রম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দরে, কলকাতা থেকে আসা জাহাজের পণ্য খালাসের মাধ্যমে এর উদ্বোধন হয়। তবে ট্রানজিট ফি নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, কোর কমিটির করা সুপারিশের পাঁচ ভাগের একভাগ মাশুল দিয়ে পণ্য পরিবহণের সুযোগ পাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। যদিও প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানের দাবি, লাভবান দু-দেশই।
এদিকে গতকাল বাংলাদেশ-ভারত নৌট্রান্সশিপমেন্ট কার্যক্রম এর উদ্বোধনের সময় নৌ পরিবহণমন্ত্রী বলেন, ট্রানজিটের মাধ্যমে দু-দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। বর্তমান সরকার ভারতের লেজুড়বৃত্তি করে না বলেও দাবি তার। আর ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা জানান, ভারতের পণ্য পরিবহণে, অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা দেবে তার দেশ। এর আগেও ট্রানজিটের চালান নিয়ে ভারত থেকে জাহাজ আসে আশুগঞ্জে। তবে তা ছিল অনানুষ্ঠানিক।
নৌ প্রটোকল চুক্তি অনুযায়ী মাশুল আরোপের পর কোলকাতার খিদিরপুর থেকে এমভি নিউটেক-৬ জাহাজ এক হাজার টন ইস্পাত নিয়ে আশুগঞ্জ বন্দরে নোঙর করে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পণ্য খালাসের মাধ্যমে ভারতের সাথে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক নৌ ট্রানজিট।
এ উপলক্ষে বন্দরের পাশেই আয়োজন করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠান। সেখানে নৌ পরিবহণমন্ত্রী বলেন, এই ট্রানজিটের মাধ্যমে প্রসার ঘটবে দু-দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য।
তবে ট্রানজিট ফি নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। কারণ কোর কমিটির করা সুপারিশের পাঁচ ভাগের একভাগ মাশুল দিয়ে পণ্য পরিবহণের সুযোগ পাচ্ছে ভারত। যদিও প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টার দাবি, লাভবান দু-দেশই।
ট্রানজিটের জন্য বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন যে এখনও উপযুক্ত না তা অনেকটাই স্পষ্ট। মহাসড়কের অবস্থাও বেহাল। অবশ্য এসব সমস্যা সমাধানে ভারত কতোটা ভূমিকা রাখবে তা স্পষ্ট করা চেষ্টা করেছেন দেশটির হাইকমিশনার।
আশুগঞ্জ বন্দরে আসা ভারতীয় পণ্যের ঠিকানা বাংলাদেশের ৫১ কিলোমিটার সড়ক হয়ে ত্রিপুরার আগরতলা সীমান্ত।
এদিকে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্রথমবারের মতো শুল্কযুক্ত নৌট্রান্সশিপমেন্টের উদ্বোধন করা হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ ভারত নৌ ট্রানজিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান ফিতা কেটে শুল্কযুক্ত নৌ ট্রান্সশিপমেন্টের মালামাল খালাসের কাজ উদ্বোধন করেন।
এর ফলে প্রথমবারের মতো শুল্ক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় পণ্য পৌঁছবে।
২০১৫ সালের ৬ জুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষরিত (পিআইডবিস্নউটিটি) চুক্তির অংশ হিসেবে এই ট্রান্সশিপমেন্টের উদ্বোধন হল।
এর আগে ভারত বাংলাদেশ নৌ প্রটোকল চুক্তির আওতায় ট্রান্সশিপমেন্টের এক হাজার টন স্টিল সিট নিয়ে গত বুধবার বিকেলে আশুগঞ্জ নৌবন্দরে পৌঁছে এমভি নিউটেক-৬ নামক একটি কার্গো জাহাজ। গত ৩ জুন এটি ভারত থেকে রওয়ানা হয়ে ৭ জুন বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করেছিল।
এদিকে নৌ-প্রটোকল চুক্তির আওতায় ট্রান্সশিপমেন্টের এক হাজার স্টিল শিট নিয়ে ভারত থেকে আসা এমভি নিউটেক-৬ নামে একটি কার্গো জাহাজ গত বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দরে এসে নোঙর করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সড়কপথে এসব পণ্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় যাবে। ২০১৫ সালের ৬ জুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে স্বাক্ষরিত পিআইডাবিস্নউটিটি চুক্তির অংশ হিসেবে ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যের প্রথম চালান বাংলাদেশে প্রবেশ করল। গত ৬ জুন জাহাজটি ভারতের কলাকাতার খিজিরপুর বন্দর থেকে রওনা হয়। ৭ জুন বাংলাদেশের প্রথম কাস্টমস স্টেশন খুলনার আটিংহারায় এটি প্রবেশ করে। আনবিস ডেভেলপমেন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান পণ্য পরিবহণের দায়িত্বে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগে ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় ভারতকে কোনো শুল্ক দিতে হতো না। এখন আগের বিভিন্ন চার্জের বাইরে নির্ধারিত হারে টনপ্রতি শুল্ক দিতে হবে। এর মধ্যে কাস্টমস টনপ্রতি ১৩০ টাকা, বিআইডাবিস্নউটিএ টনপ্রতি ১০ টাকা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৫২ দশমিক ২২ টাকা হারে শুল্ক পাবে। এ ছাড়া সড়কপথে পরিবহণের সময় পুলিশি প্রহরা নিলে টনপ্রতি ৫০ টাকা হারে ফি দিতে হবে। এর বাইরে ভয়েজ পারমিশন ফি, পাইলটিং ফি, বার্দিং (অবস্থান) ফি, ল্যান্ডিং চার্জ, চ্যানেল ফি, লেবার ফি গুনতে হবে পণ্য পরিবহণকারী প্রতিষ্ঠানকে।