ভূমি জটিলতায় চাঁদপুরে আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপন করা যাচ্ছে না
চাঁদপুর থেকে মিজানুর রহমান : অর্থ বরাদ্দ পেয়েও ভূমি সংক্রান্ত জটিলতায় চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপন করা যাচ্ছে না। ৫ বছর আগে বরাদ্দকৃত অর্থ জুন মাসে ফেরৎ যাবার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ সংক্রান্ত কাজে সংশ্লিষ্ট চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপনের বিষয়ে চাঁদপুর সদর কোর্টে সম্পত্তি নিয়ে মামলা রিভিউ অবস্থায় রয়েছে। মামলাটির নিয়মিত তারিখ ছিল ৩ এপ্রিল ২০১৬। এ তারিখেও কোন সমাধান হয়নি। মামলাটির সমাধান হলেই জটিলতা কেটে যাবে।
২শ শয্যার এই হাসপাতালটিকে আড়াইশ শয্যায় উন্নতিকরণের লক্ষ্যে আরও ৫০ শয্যার অবকাঠামোসহ সিসিইউ ও আইসিইউ স্থাপনের জন্যে ৬ তলা বিশিষ্ট একটি পৃথক ভবন নির্মাণ করতে ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এইচএনপিএসপি তথা স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা সেক্টর উন্নয়ন প্রোগ্রামের আওতায় ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর চাঁদপুরের স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখিত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়।
এ সংক্রান্ত পত্রটি ২০১২ সালের ২৪ জানুয়ারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগকে হস্তগত করে। এরপর গণপূর্ত বিভাগ তাদের ফাইল ওয়ার্ক শুরু করে। পরে আবার সমস্যা দাঁড়ায় পরিবেশ অধিদফতর নিয়ে। সেটিও পরিবেশ অধিদফতরের কেন্দ্রীয় দফতর থেকে ছাড়পত্রের ব্যবস্থা করা হয়। এটি স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদফতর চিঠি পাঠায়। চাঁদপুর পৌরসভা থেকেও এ বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই।
আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপনের জন্য যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হলেও সর্বশেষ ভূমি সমস্যায় এটি এখন আর আলোর মুখ দেখছে না। উল্লেখ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবস্থানগত কারণে চাঁদপুর জেলা সদরের এ হাসপাতালটি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলার চিকিৎসাসেবায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর, মাদারীপুর, লক্ষ্মীপুর এমনকি মুন্সীগঞ্জ থেকেও চাঁদপুরের এ হাসপাতলে রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। গুরুতর বিবেচনায় এ হাসপাতালে সিসিইউ (করনারী কেয়ার ইউনিট) তথা হার্টের পরিচর্যা কেন্দ্র ও আইসিইউ (ইনটেনসি কেয়ার ইউনিট) তথা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপন খুবই জরুরি।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে সিসিইউ ও আইসিইউ না থাকায় হার্টের রোগীদের ঢাকা পাঠিয়ে দিতে হয়। সে অবস্থায় দেখা যায়, হার্টের রোগী ঢাকা নেয়ার পথে মারা যায়। যদি চাঁদপুরে এ ব্যবস্থা থাকতো তাহলে হার্টের রোগীদের চিকিৎসা এখানেই হতো। উক্ত হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রদীপ কুমার দত্ত ভূমি সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।
সরকারি এ হাসপাতলটি নামকরণ ২৫০ শয্যা হলেও অবকাঠামো ও প্রশাসনিক অনুমোদনসহ সব কিছুই এখনো ২শ’ শয্যা হিসেবেই রয়েছে।