অর্থনৈতিক রিপোর্টার : হ্যাকাররা সুইফট কোডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে যে ১০১ মিলিয়ন ডলার লোপাট করেছে তার কোনো দায় নিতে রাজি নয় বৈশ্বিক আর্থিক লেনদেন বিষয়ক নেটওয়ার্ক সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন (সুইফট)। তারা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি যাওয়ার ঘটনায় তাদের কোনো দায় নেই। এক্ষেত্রে তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থারও কোনো ত্রুটি ছিল না। গত বৃহস্পতিবার সুইফটের এশিয়া প্যাসিফিক, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা বিষয়ক নির্বাহী প্রধান অ্যালেন রায়েস ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন যা ফিলিপাইনের র্যাপলার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। নিজেদের লেনদেনের নিরাপত্তা বিধানের জন্য সদস্য ব্যাংকগুলোই দায়ী মন্তব্য করে অ্যালেন রায়েস বলেন, সুইফট এবং ব্যাংকের দায়িত্বের পার্থক্যটা আমাদের বোঝা দরকার। নিজেদের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় ভুল কিছু ঘটছে কি না তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ব্যাংকগুলোরই। আমরা দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত যে আমাদের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় কোনো ত্রুটি ছিল না। আমাদের নেটওয়ার্ক নিশ্ছিদ্র ছিল।
তিনি জানান, লেনদেনের ব্যাপারে মক্কেলদের অবহিত করা এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে তাদের জানানোর কাজ সুইফটের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রত্যেককে অবহিত করা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করাই আমাদের দায়িত্ব।
তিনি আরো জানান, সুইফটের একটি নিজস্ব মনিটর আছে, যেটির মধ্যে প্রতিদিনের লেনদেনসহ যেকোনো ধরনের ত্রুটির রেকর্ড থাকবে। এ কারণে সুইফট সিস্টেমের লেনদেন বিষয়ে নিরাপত্তা আরো জোরদারের কোনো কারণ নেই।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা চুরি করে নেয় হ্যাকাররা। ঘটনাটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। ঐ ঘটনায় পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এ ঘটনায় অবশ্য শুরুতে হ্যাকিংয়ের কথা স্বীকার করলেও এর জন্য মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভকেই দুষেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাংক বলেছে, এখানে সব নিয়ম মেনেই অর্থ স্থানান্তর ঘটেছে যেখানে তাদের কিছুই করার ছিল না। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার উপর সন্দেহ ঘনীভূত হয়। ইতোমধ্যে দুই ডেপুটি গভর্নরের চাকরি গেছে, নজরদারিতে আছেন আরো অনেকে। বিষয়টি এখন সিআইডি’র তদন্তাধীন।