ONLINE: যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনায় আরো ৯৭ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ফেরত দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিপাইনের আলোচিত চীনা ব্যবসায়ী কিম অং।
গতকাল মঙ্গলবার ফিলিপাইনে সিনেট কমিটির চতুর্থ দিনের শুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন বলে দেশটির দৈনিক ইনকোয়ারারের অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সিনেটের বস্নু রিবন কমিটির এই শুনানিতে কিম অং ছাড়াও অংশ নেন রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতো। এ ঘটনায় এর আগে ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার ফেরত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন কিম অং। ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের সচিবালয়ে ঐ ডলার জমা দেন তিনি।
ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনে সিনেট কমিটির চতুর্থ দিনের শুনানিতে অং জানিয়েছেন, আগামী ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ঐ পরিমাণ অর্থ তিনি সিনেট কমিটির কাছে তিনি জমা দেবেন। এর আগে সিনেট কমিটির প্রথম শুনানিতে দেগুইতো বলেছিলেন, অং আরসিবিসি প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী লোরেনজো ট্যানের বন্ধু এবং অং-ই তার শাখায় চারজনকে পাঠিয়েছিলেন যারা নতুন একাউন্ট খুলে চুরির অর্থ গ্রহণ ও উত্তোলন করেছেন। কিন্তু প্রথমদিন শুনানিতে উপস্থিত হয়ে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন ব্যবসায়ী কিম অং। তবে এরইমধ্যে গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে নিজের কাছে থাকা ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার ফেরত দিয়েছেন অং।
সিনেট কমিটির প্রথম দুই দফা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন দেগুইতো। তবে গত সপ্তাহে তৃতীয় দফা শুনানিতে প্রধান অভিযুক্ত কিম অং যেদিন প্রথমবারের মতো হাজির হয়েছিলেন সেদিন অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অনুপস্থিত ছিলেন দেগুইতো।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে হ্যাকারদের মাধ্যমে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনা দেশে প্রথম জানাজানি হয় গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে। এরও মাস খানেক আগে চুরি হওয়া ঐ অর্থ ফেরত পেতে বাংলাদেশ ব্যাংক অত্যন্ত গোপনে মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে জোর তৎপরতা শুরু করে। ফিলিপাইনের দৈনিক দ্য ইনকোয়ারার পত্রিকায় গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ থেকে ১০ কোটি ডলার মানি লন্ডারিং হয়েছে বলে একটা খবর প্রকাশিত হয়। ঐ খবরে বলা হয়, দেশটির মাকাতি শহরে অবস্থিত রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের একটি শাখার মাধ্যমে ঐ অর্থ ফিলিপাইনে আসে। চীনা হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা সেখানকার কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এ অর্থ হাতিয়ে নেয়। রিজার্ভের ঐ অর্থ চুরির ঘটনায় নানা সমালোচনার মুখে পরবর্তীতে পদত্যাগে বাধ্য হন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।