KBDNEWS .COM : এ প্রসঙ্গে পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন পবার সম্পাদক ও নীতিবিশ্লেষক সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, দ্রুত কমে আসছে কৃষিজমি। প্রতিদিন দেশে গড়ে ২২০ হেক্টর কৃষিজমি চলে যাচ্ছে শিল্পকারখানা স্থাপন, নগরায়ন, বসতবাড়ি তৈরি ও রাস্তাঘাট নির্মাণের কাজে। ফলে একদিকে যেমন পরিবেশের ওপর হুমকি সৃষ্টি হচ্ছে। অপরদিকে দেশে খাদ্য নিরাপত্তায়ও দেখা দিয়েছে এক অশনি সঙ্কেত। আর এই কারণে ভূমি ব্যবহারের জন্য একটি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রয়োজন।
এবিষয়ে সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, প্রতিদিনই বাড়ছে মানুষ, প্রয়োজন হচ্ছে বাসস্থানে। জলাধার, বন রক্ষায় আইন ও নীতিমালা থাকলে সরকারের মনিটরিংয়ের অভাবে এর তোয়াক্কা করছেন না কেউ। আর তাই যে যেভাবে পারছে-নদী, খাল, বিল, ডোবা নালা ভরাট, আবাদযোগ্য কৃষিজমি ও বন উজাড় করছে।
তিনি বলেন, পরিসংখ্যান বলছে-গত ৩৭ বছরে শুধুমাত্র ঘরবাড়ি নির্মাণ হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার একর জমিতে। যা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি। তার মতে, সবার আগে জনগণকে সচেতন করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জানাতে চাইলে, বিশিষ্টনগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, বৃহত জনবসতির দেশ হিসেবে সবার আগে বাংলাদেশে ভূমি ব্যবহারের জন্য নীতিমালা থাকা উচিত ছিল। হল্যান্ড, তাইওয়ান, ইসরাইল-পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পরিকল্পনা অনুযায়ী ভূমির ব্যবহার করা হচ্ছে। সেসব দেশে এক ইঞ্চি জমিও পরিকল্পনার বাইরে ব্যবহারের সুযোগ নেই। দেশে সাড়ে ৩ কোটি একর জমির মধ্যে ২ কোটি একরের কিছু বেশি কৃষি জমি রয়েছে। এসব জমি দ্রুত বিভিন্ন খাতে রূপান্তরিত হচ্ছে।
এদিকে কৃষি জমির বাণিজ্যিক ব্যবহার সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত নিজের প্রবন্ধে বলেন, দেশের কৃষি জমি রক্ষা করতে হলে ও কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ ঠেকাতে সরকারের নীতি ঠিক হওয়া প্রয়োজন।
তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, কৃষিজমি অকৃষি হওয়া ও বাণিজ্যিকীকরণ রোধে তামাকের উৎপাদন কমাতে হবে। এজন্য সরকারের রাজস্বনীতি শক্ত করতে হবে। আইন করে বহুজাতিক কোম্পানির তামাক উৎপাদনের বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। চিংড়িচাষ বিশেষভাবে বন্ধ, জমির মান বাড়ানো এবং খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের কথা বলেন বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ।