বি এম রাকিব হাসান, খুলনা: খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল তিনটিতেই ধর্ষণ মামলার জট দীর্ঘদিনের। দশ বছর আগে দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলায় বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি আজও। সর্বশেষ রায় হয়েছিল তাও প্রায় এক বছর পূর্বে। গেল বছরে ট্রাইব্যুনালে আসা ৮০টি মামলার বিচারকার্যও শুরম্নই হয়নি এখনো। ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারক বদলী হয়েছেন চার মাস আগে, আরেকজন সাতদিনের ছুটিতে। তিনটি ট্রাইব্যুনালে প্রতিদিন গড়ে ৫০টি করে মামলার ধার্য্য দিন পড়ছে। খুলনার ট্রাইব্যুনালগুলোতে ৬১৯ মামলা বিচারাধীন।
সংশিস্নষ্ট সূত্র জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোঃ মহিদুজ্জামান গত ১২ জুলাই বদলী হয়েছেন। এ ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বে অপর একজন জজ। জামিন শুনানী ও আপোষ যোগ্য মামলা ছাড়া অন্য কোন কার্যক্রম নেই। এ ট্রাইব্যুনালে ১২১টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। করোনা পরিসি’তির জন্য স্বাস’্যবিধি মানতে ট্রাইব্যুনালে সাড়্গী ডাকা হচ্ছে না।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ ৩১০টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। এ ট্রাইব্যুনালের জজ সাতদিনের ছুটিতে আছেন। তিনি আগামী রবিবার থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি মাসেই নতুন নতুন মামলা আসছে। এখানেও চার্জশীট আসছে বিলম্বিত হচ্ছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ ১৫৯টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। তার মধ্যে নয়টি গণধর্ষণ। সবচেয়ে আলোচিত মামলা দৌলতপুরে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ হালিমাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকান্ড ঘটে ২০০৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর। মামলাটিতে ২৪ জন সাড়্গীর মধ্যে ৬ জন সাড়্গ্য দিয়েছেন। এ ট্রাইব্যুনালে ২০১৯ সালের জুন থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যনত্ম ৩৩টি নতুন মামলা এসেছে। এসব মামলার বিচার কার্যক্রম শুরম্ন হয়নি এখনো। গত মঙ্গলবার এ ট্রাইব্যুনালে ১৭টি মামলার স্বাড়্গ্য, পাঁচটি শুনানীর জন্য এবং দু’টি তদনেত্মর জন্য দিন ধার্য্য ছিল।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি অলোকা নন্দা দাশ জানান, সাড়্গী আসছে না। তাছাড়া করোনাকালীন সময়ে অনেক মামলা পেন্ডিং হয়ে আছে। এ ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাতদিনের ছুটিতে। ফলে মামলা দ্রম্নত নিষ্পত্তি হচ্ছে না।
ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি জেসমিন পারভীন জলি বলেন, গত বছরের জুন থেকে এ পর্যনত্ম আসা মামলার বিচার কার্যক্রম এখনো শুরম্ন হয়নি। এ ট্রাইবুনালে ২০১১ সালের মামলাও বিচারাধীন। তদনত্মকারী কর্মকর্তা চার্জশীট দিতে বিলম্ব করছেন। সাড়্গী না আসায় সবচেয়ে আলোচিত দৌলতপুরের শিশু হালিমা ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলার বিচার কার্য শেষ হচ্ছে না।
ট্রাইব্যুনাল-৩ এর পিপি মোঃ ফরিদ আহমেদ জানান, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নগরীর বাসত্মুহারা কলোনীর আফসানা মীম নামের কিশোরীকে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলায় দু’জনের মৃত্যু দন্ডাদেশ দেয়া হয়। এটাই এ টাইব্যুনালের শেষ রায়। নতুন আইন অনুযায়ী ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ হলে সুফল পাওয়া যাবে বলে তিনি উলেস্নখ করেন।