Kjkhan : করোনা সঙ্কটকে পুঁজি করে যেসব অসাধু ব্যবসায়ী ওষুধ ও মেডিক্যাল ইকুইপম্যান্টের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে মাঠে নামছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব মনিটরিং টিম ও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। গতকাল সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। টাস্কফোর্সের প্রধান বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীতেও যেসব ব্যবসায়ী অনৈতিকভাবে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর দাম বেশি রাখছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে। আজ থেকেই মনিটরিং টিম দুটো অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানান তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৮২ সালের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের ১১ ধারার ১ উপধারা মতে, যে কোনো ওষুধের বিক্রয় মূল্য সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করবে। একই ধারার ২ উপধারায় বলা হয়েছে, আমদানিকৃত কাঁচামালের দামের নিরিখে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু দেশে ওষুধের মূল্য নির্ধারণে সর্বশেষ গেজেট প্রকাশ হয়েছিল ২০০০ সালে। আর দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ওষুধের মূল্য নির্ধারণী গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় ওষুধ কোম্পানিগুলো অনৈতিক সুযোগ নিচ্ছে। তারা নিজেদের খেয়ালখুশি মতো ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। ওষুধের মূল্য নির্ধারণী গেজেট প্রকাশ প্রসঙ্গে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, দেশে বর্তমানে প্রায় ২৮ হাজার প্রকারের ওষুধ রয়েছে। কিন্তু ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর মাত্র ১১৭ ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে। স্বল্পসংখ্যক ওষুধের কারণেই গেজেট প্রকাশ করা হচ্ছে না।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পুরনো আদেশের কারণে ১১৭ ছাড়া বাকি সব ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের নেই। অন্যান্য ওষুধ নিজ নিজ কোম্পানি নির্ধারণ করে থাকে। কোম্পানিগুলো নিজ নিজ ওষুধের মূল্য তালিকা ওষুধ প্রশাসনে জমা দেয়। মালিকপক্ষের মূল্য তালিকা কমানো বা বাড়ানোর ক্ষমতা অধিদফতরের নেই।
সারাদেশেই নানা অজুহাতে বেড়েছে ওষুধের দাম। বিশেষ করে খুচরা বাজারে মূল্য বৃদ্ধির মাত্রা যেন বেশি। খুচরা বিক্রেতারা নিজেদের মতো করে দাম নির্ধারণ করে থাকে। ঘন ঘন মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৪ সালের এক নির্দেশনার কারণেই ওষুধের মূল্য হরাস-বৃদ্ধিতে হস্তক্ষেপের ক্ষমতা হারিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জীবন রক্ষাকারী অত্যাবশ্যকীয় ১১৭ ওষুধের নূ্যনতম ৬০ শতাংশ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো অন্যান্য ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করতে পারবে।