মেহেরপুর জেলা উন্নয়ন ফোরাম আতাউর রহমান,
প্রিয় মেহেরপুরবাসী : “মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আধুনিক মেহেরপুর গড়ার প্রত্যয়ে” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে অনেকটা নিরবে ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে আমাদের পথ চলা শুরু। মেহেপুর জেলা উন্নয়ন ফোরামের পক্ষ থেকে জেলাবাসীকে জানাই অভিনন্দন ও সালাম। মেহেরপুর জেলা সবচেয়ে ছোট কিন্তু ঐতিহাসিক ভাবে সবচেয়ে বড় মর্যদায় অলংকৃত, যা মেহেরপুর জেলাবাসির জন্য অনেক-অনেক বড় পাওয়া। যতদিন বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ থাকবে ততদিন এই ঐতিহাসিক মেহেরপুর জেলাকে প্রতি বছর ১৭ই এপ্রিল সর্বোচ্চ সম্মানে স্বরন করতেই হবে। যা মহান সৃষ্টিকর্তার বিশেষ আশির্বাদ। এই দিনেই প্রথম সরকার শপত ও রাজধানী ঘোষনা করে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল আর মেহেরপুর জেলাবাসির কপালে পড়েছিল রাজটিকা। যদি আমরা এই সৌভাগ্যকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হই, এ জন্য আমারই দায়ী। স্বপ্নের স্বাধীনতা অর্জনের একদিনের নবজাতক শিশু বাংলাদেশ আজ তার বয়স ৪৪ পেরিয়ে ৪৫ বছর। অনেক শাসনের হাত বদল হলেও প্রতিহিংসার ধ্বংসাত্বক রাজনীতি,ভয়াবহ দুর্নীতি,শোষন,বৈষম্য,জঙ্গিবাদ,মাদক,সন্ত্রাস,বাল্য বিবাহ,মানব পাচার,লোম হর্ষক শিশু ও নারী নির্যাতন, আইন যেন জিম্মি, প্রজা যেনো রাজার ভূমিকায়, স্বাধীনতা যেনো পরাধীন আর দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ আজও গড়তে পারেনি। কিন্তু কেন? কি জন্য? কাদের কারণে এই ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি? জনগন আজ জানতে ও দেখতে চায় এর গভীর অনুসন্ধান, গবেষনা আর কঠোর পদক্ষেপ। এর মধ্যে চরম উন্নয়ন অবহেলিত ঐতিহাসিক মেহেরপুর জেলা। প্রিয় মেহেরপুরবাসী সময়ের প্রয়োজনে আপনাদের দুয়ারে-দুয়ারে পৌছে দিতে চাই ঐতিহাসিক মুজিবনগর খ্যাত মেহেরপুর জেলার উন্নয়ন ইস্যুতে একটি সুন্দর স্বনির্ভর আধুনিক মেহেরপুর গড়ার আহবান। শুরু একজন করলেও শেষ সকলে মিলেই করতে হবে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন দিনের নতুন আশায় থেমে থাকা অন্ধকার থেকে শুরু হবে আলোর পথের সন্ধান। এই প্রত্যাশায় আমাদের আহবান আর আপনাদের সুবিবেচনা।
১০ দফা উন্নয়নে আন্দোলন কর্মসূচী :
১। পীর আউলিয়া ফকির দরবেশের পূণ্যস্থান,আদর্শ কৃষি উর্বর জমিন, ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনে জলন্ত স্মৃতি আর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ডাকে ১৯৭১ সালে ১৭ই এপ্রিল মুজিবনগর আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন ও রাজধানী ঘোষনা করা হয়। আগামী ২০৫০ সালকে সামনে রেখে মেহেরপুর জেলার তিন উপজেলার (মেহেরপুর সদর,গাংনী ও মুজিবনগর এবং ১৮ ইউনিয়ন, ২ পৌরসভা) এর জনসংখা,আবাদি জমি, আবাসন, খাদ্য, জ্বালানী, পানি,
চিকিৎসা, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, যোগাযোগ, পরিবহন, অবকাঠামো, কর্মসংস’ান, অর্থনীতি, ব্যয়ভার, স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ এবং স্বনির্ভরতা অর্জনে সার্বিক দিক গভীর গবেষনা ও গঠন মূলক আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে একটি দীর্ঘ মেয়াদি মাস্টার প্লান দ্রুত তৈরি করা। ঐতিহাসিক মুজিবনগর এবং আমঝুপি-নীলকুঠিকে সর্বাধুনিক ইকো পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা। মুজিবনগর কেন্দ্রিক ১০০ সয্যা বিশিষ্ট একটি আধুনিক হোটেল,সরকারী প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে বহুতল মোটেল বা রেস্টহাউজ করা। একটি আধুনিক শুটিং স্পট, মিনি ডিজিটাল সিনেমা হল, শিশু পার্ক সহ মুজিবনগর টু আমঝুপি নীলকুঠি ট্রাম টুরিজম ও নৌ স্পিডবোর্ড টুরিজম যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা। সাংবিধানিক ভাবে ১৭ এপ্রিল প্রথম সরকার,জাতীয় শপত ও রাজধানী ঘোষনা এবং ২৪ ঘন্টা জাতীয় পতাকা উত্তোলন চায়। প্রথম সরকার ও রাজধানী হিসাবে একটি মিনি পার্লামেন্ট ভবন স্থাপন এবং প্রতি বছর একটি অধিবেশনের ব্যবস্থা করা। যা স্বনির্ভর ও আধুনিকতা অর্জনে নতুন পথ দেখাবে। মুজিবনগরকে আন্তর্জাতিক মানের ইকো পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে আরো আয়োতন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, এ ক্ষেত্রে মুজিবনগর সংলগ্ন চুয়াডাঙ্গা দামুরহুদা থানার নাটুদাহ ইউনিয়নকে সংযুক্ত করা। মেহেরপুর জেলা মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহি অবহেলিত স্থান গুলোকে চিহ্নিত করন, সংরক্ষন এবং পর্যটন কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠিত করা। জেলা উন্নয়নে চায় জেলা ঐক্য, এছাড়া একটি জেলার সার্বিক উন্ন্য়ন সম্ভব নয়।
২। এই উপমহাদেশের সব চেয়ে প্রভাবশালী ও শক্তিশালী দেশ বৃহত্তর ভারত। ভারত বাংলাদেশের সাথে স্থল বন্দরে যে ব্যবসা বাণিজ্য হয় তার মধ্যে অন্যতম সেরা ব্যবসা পয়েন্ট মেহেরপুর। সেই দিক বিবেচনা করে এই মেহেরপুর জেলায় রেল ও আধুনিক যোগাযোগ সহ সর্বাধুনিক একটি স্থল বন্দর চালু করা। যা মেহেরপুরসহ বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমৃদ্ধি অর্জনকে এগিয়ে নিতে ব্যপকভাবে সাহায্য করবে।
৩। মেহেরপুর জেলাবাসীর জীবনের সাথে অতঃপ্রত ভাবে জড়িয়ে আছে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালটি। বাংলাদেশের অন্যতম একটি মডেল হাসপাতাল। হাসপাতালের বয়স আজ ২০ বছর কিন্তু চার গুন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও চিকিৎসা সেবা বহুধাপ নেমেছে নিচে, যা আমাদের জন্য খুবই দুঃসংবাদ এবং দুর্ভাগ্য। এই হাসপাতালের উপর ভর করে অনেকে এমপি,মেয়র,উপজেলা চেয়ারম্যান,ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সহ অনেকে বড় বড় নেতা ও সম্পদশালী হয়েছে অথচ হাসপাতালের দুঃসময় তাদের কাছে শুধুই রাজনীতির হাতিয়ার মাত্র। চরম অবহেলিত এই আধুনিক হাসপাতালকে ২৪ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা,সেন্ট্রাল এসি করা সহ সাধারন মানুষের সর্বোচ্চ সেবা পাওয়ার সুনিশ্চিত ব্যবস্থা করা এবং ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল এন্ড মেডিকেল কলেজে উন্নতিকরন। মুজিবনগর ও গাংনী হাসপাতালের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে আন্দোলন অব্যাহত রাখা। অনুমোদন প্রাপ্ত নাসিং ইনষ্টিটিউট দ্রুত বাস্তবায়ন, মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলির সেবা নিশ্চিত করন সহ মেহেরপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল আধুনিক উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহন। সমৃদ্ধি অর্জনের পূর্বশর্ত দেশপ্রেম চেতনায় সৃষ্টিশীল মেধা প্রতিভা ও সততার সর্বোচ্চ সম্মান এবং মূল্যায়ন করতে হবে।
৪। আগামীতে নিশ্চিত পানি যুদ্ধ। এই যুদ্ধের অন্যতম ভয়াবহ মোকাবেলা করতে হবে মেহেরপুরবাসীকে। সেইদিক বিবেচনা করেই এখন কেবলই স্মৃতি বিজড়িত বাংলার নদী মাতৃক নিশ্চিত প্রবাহকে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ পরিকল্পনাকে কাজে লাগিয়ে মেহেরপুর জেলার প্রান ভৈরব ও কাজলা নদী সহ সকল নদী পরিকল্পিতভাবে গভীর খনন করা এবং পানির দীর্ঘ মেয়াদি চাহিদা সুনিশ্চিত করা। স্বনির্ভর লক্ষ্যে নেট খাচা পদ্ধতিতে সমবায় বানিজ্যিক মাছ চাষ, ৫ লক্ষ ডিম উৎপাদন ক্যাম্বেল হাস ও রাজ হাঁস চাষ এবং নদীর দুই পারে বৃক্ষরোপন সহ পর্যটন কেন্দ্রিক ব্যবহার করা। যেখান থেকে বছরে ২০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। জেলার যে সব সরকারী খাল,বিল,খাস জমি আছে তার উন্নয়ন, প্রকৃত মৎস জীবি ও নিম্ন আয়ের শ্রমজীবিদের অংশ গ্রহনে অধিকার রক্ষা করা। ভৈরব নদী কেন্দ্রিক সমবায় ভিত্তিক গভীর সেচ প্রকল্প চালু করা। হারিয়ে যাওয়া প্রচুর পুষ্টি লাভজনক ও চাহিদা বিশ্ব সেরা ব্লাক বেঙ্গল খ্যাত মেহেরপুরের কালো ছাগল ও বলিষ্ঠ গাড়ল (ভ্যাড়া) বিদেশে রপ্তানি হবে, একটি বাড়ি একটি খামারের মাধ্যমে ও সমবায় ভিত্তিক বানিজ্যিক উৎপাদনের মাধ্যমে। সেভ লাইফ নামে মিনারেল ওয়াটার বাজারজাত করন। নিম্ন বর্ণের সংখ্যা লঘুদের অধিকার সংরক্ষন করতে হবে। ভয়াবহ মরনব্যাধি দুর্নীতি যা উন্নয়নের বড় বাধা, তাই সর্বোক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার বাধ্যতামূলক চালু করা সহ বিকেন্দ্রিকরন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৫। সেবাই মানবতার শ্রেষ্ঠ কর্ম, যা শ্রষ্টার শ্রেষ্ঠ চাওয়া। যাদের সেবাই এ দেশ চলে সেই সব মেহনতি মানুষের আজ সর্বোক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের স্বীকার, যেনো দিন-দিন বেড়েই চলেছে। আমাদের মনে রাখা উচিৎ সৃষ্টিকর্তা বৈষম্য আর সমন্বয় করেই পৃথীবি সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু আমরা সেই সমন্বয় বাস্তবায়ন করতে চরমভাবে ব্যর্থ। যাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অতি কষ্টার্জিত উপার্জিত অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট থেকে একজন সুইপারের বেতনের ৮০ ভাগ পরিশোধ করা হয় অথচ সেই শ্রমজীবি মানুষ আজ চরম ভাবে অবহেলিত। তাদের ন্যায্য অধিকার ও জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে সকল ধরনের শ্রমিক মুজুরি নুন্যতম ৮ ঘন্টার ডিউটিতে সর্ব নিন্ম ৩০০ টাকা চালু করা সহ সর্বোচ্চ স্বনির্ভরমুখি পদক্ষেপ গ্রহন। সামর্থবান ব্যক্তিদের কাছে সবিনয়ে দাবি, দরিদ্র অসহায় মানুষের জন্য বছরে একটি নুন্যতম ন্যায্য বাজেট রাখুন, পাশে থাকুন স্বনির্ভরতায় নিশ্চিত বিপ্লব ঘটবে। ধর্ম দল যার যার কিন্তু মেহেরপুর হবে সবার। যে কোনো অপচয় রোধ করি এবং সঞ্চয় হই, আবেগ দিয়ে নয় বিবেক দিয়ে বিবেচনা করি, কর্মকে সাথী করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রীতি, বন্ধন, উন্নয়ন, মানবতার আধুনিক মেহেরপুর গড়ে তুলি। ইতিহাস আমাদের শক্তি, সমৃদ্ধি অর্জনের অনুপ্রেরনা।
৬। সারা বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম আদর্শ সেরা কৃষি অঞ্চল হিসাবে খ্যাত এই মেহেরপুর জেলা। এখানকার উর্বর কৃষি জমি রক্ষা এবং কৃষকের উৎপাদিত পন্যের সঠিক মূল্য ও আধুনিক কৃষি সেবা পাওয়ার সুব্যবস্থা করা। জৈব্য সারের ব্যবহার বাধ্যতা মূলক নিশ্চিত করা। গাংনীর চিৎলা কৃষি ফার্ম বাংলাদেশের সেরা একটি বৃহৎ বীজ উৎপাদন সেন্টার। সময়ের প্রয়োজনেই এই ফার্মটিকে একটি আন্তর্জাতিক মানের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ৪এ এই প্লানে কৃষি ও জিওগ্রাফী বিশ্ববিদ্যালয় ও রিসার্স সেন্টার চালু করা। আলু,পিয়াজ,কাচা মরিচ,টমেটো,গাজর,আম,কাঠাল, দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়াজাত এবং বৃহত আকারে পাট প্রোসেসিং সেন্টার সহ বিদেশে রপ্তানি করন প্রকল্প বাস্তবায়ন। কৃষকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, এছারা অবশ্যই মেহেরপুর জেলার বিসিক শিল্প নগরীকে আধুনিক উন্নয়নমুখী বাস্তবায়ন রূপ দেওয়ার নিমিত্তে আয়তন বৃদ্ধি, ট্যাক ফ্রি জোন ঘোষনা করা সহ সহজ শর্তে জমি ও ঋণ কর্মসূচি চালু করা। আন্তর্জাতিক মানের কৃষি শিল্প অঞ্চল গড়ে তোলা।
৭। সার্বিক উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত স্বয়ং সম্পুর্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এই লক্ষে কুষ্টিয়া,চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার সমন্বয়ে একটি ৫০ মেগোওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সুব্যবস্থা করা। পারিবারিক শেয়ারে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় মাদক,ভেজার ঔষধ,সার-বীজ, অস্ত্র,সন্ত্রাস,জঙ্গীবাদ,বেকারত্ব,সল্পশিক্ষা,বাল্যবিবাহ এবং বিভিন্ন অবরাধ ও অপরাধী চক্র ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব রুখে দিতে সর্বোমহলে ব্যাপব গনসচেনতা সৃষ্টি, নিরাপদ সীমান্ত নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য প্রশস্ত বর্ডার বেল্ট রোড তৈরি করা খুবই জরুরি। সর্বোস্তরে যোগ্য নেতা নির্বাচনের জন্য প্রক্রিয়া চালু করা। ভোট আমাদের পবিত্র আমানত “একটি ভোট একটি উন্নয়ন, একটি ভোট একটি প্রতিবাদ”। তেমনি না ভোট অধিকার এবং সকল নির্বাচনে না ভোট চালু করা। ১৭ই এপ্রিল কারনেই মেহেরপুরবাসী ভি,ভি,আই,পি সুবিধা ভোগ করবে।
৮। একটি জাতির শক্তি; ছাত্র ও যুব সমাজ। তাদের নৈতিক আদর্শ,দেশপ্রেম প্রতিষ্ঠায় এবং প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে মুক্ত চিন্তার ক্লাব প্রতিষ্ঠা,ব্লাড ব্যাংক, হেলপ ক্লাব,বাঙ্গালী সাংস্কৃতি ও ক্রিড়া ক্লাব কর্মসূচী সহ গনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা। মেধা ও প্রতিভা মূল্যায়নে সমাজের সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের নাম করনে বৃত্তি ফাউন্ডেশন চালু করা। তিন উপজেলায় পাঁচ তলা বিশিষ্ট একটি ইনডোর স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করা সহ মেহেরপুর স্টেডিয়ামকে পূর্নাঙ্গ রুপ দেওয়া। বি.কে.এস.পি. তে চৌকশ ছাত্রদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেনিং এর উদ্দ্যোগ গ্রহন। গরীব মৃত ব্যক্তিদের দাফন দেওয়ার ফ্রি ব্যবস্থা করা। মেহেরপুর সরকারী কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় মানের করা। স্কুল কলেজ বাস সাভিস চালু। মসজিদ ভিত্তিক কোরআন ও নৈতিক শিক্ষা চালু এছাড়া শিশু শিক্ষায় ভাল অবদান রাখা চলমান কিন্ডার গার্টেন গুলো যে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তাকে আরো উৎসাহিত করে শিশু শিক্ষার মানকে আরো উন্নত করতে জোর সুপারিশ করা। একটি আধুনিক প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্তক চেষ্টা সহ তাদের জন্য একটি আর্নিং হাউজ প্রতিষ্ঠা করা। শিক্ষাক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে সর্বোচ্চ দশটি বই চালু করা। জাতীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংক চাই,সঠিক মুক্তিযোদ্ধা,ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা,রাজাকার,হলুদ সাংবাদ, অসহায় গুনী শীল্পি, দূনীতিবাজ রাজনীতিবিদ ও চাকুরিজীবী সহ সমাজের মারাত্তক ক্ষতিকার দিক চিহ্নিতকরণ।
৯। টেকনিক্যাল মানব সম্পদ উন্নয়নে যুব উন্নয়ন নির্ধারিত ট্রেনিং সেন্টারের বাস্তবায়ন সহ এভাবে বিভিন্ন বিদেশের চাহিদা এমন ট্রেড শিক্ষা ও ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে সরাসরি বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। মেহেরপুরের সফল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে “মেহেরপুর গোল্ড” অ্যাওয়ার্ড প্রদান। ৩ উপজেলাই একই মডেলে পারিবারিক বন্ধনে “মাদার লাভ” নামে বৃদ্ধ আশ্রম খোলা, “হোম সার্ভিস” ক্ষুদ্র সঞ্চয় ব্যাংক, দ্যা ল ক্লাব, হজ্জকাফেলা নামে নাগরিক সেবা প্রদান, পার্ট টাইম আড্ডা জব নামে প্রতিষ্ঠান খুলতে চাই যেখানে ছাত্র সমাজ শিক্ষিত বেকার তাদের সময় ও মেধাকে অপচয় না করে পার্ট টাইম জব করে অর্থ উপার্জনে সুযোগ তৈরী করা। পারিবারিক শেয়ারে বিশ্বমানের টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করা। মেহেরপুর জেলার সার্বিক উন্নয়নে সরাসরি জনতার অধিকারে জনতার মুখোমুখি জরিপ ও টক-শো লাইফ প্রোগ্রাম চালু। দৈনিক প্রথম রাজধানী এবং ভয়েজ অব মেহেরপুর অনলাইন পত্রিকা প্রকাশ। অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং রুচি সম্পন্ন একটি “মেহেরপুর গাইড” বই প্রকাশ এবং জেলার সকল সফল ও কৃতি সন্তানদের পরিচয় সংগ্রহ ও সম্মাননা প্রদান। তিন উপজেলায় একটি করে শিক্ষামূলক বিনোদন পার্ক তৈরী করা।
১০। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র থেকেই বৃহত্তর। একতাই বল। দশে মিলে করি কাজ। লক্ষ মনের লক্ষ মত আলোচনায় আসবে সুপথ। এই নীতিতে এগিয়ে যেতে হবে এবং তা প্রমান করতে ‘‘পবিত্র রোজার ঈদের পরের দিন মেহেরপুর স্বনির্ভর দিবস ঘোষনা দিয়ে পবিত্র রমজানের একমাস ন্যায্য মুল্যে ঈদ আনন্দমেলা আয়োজনের মাধ্যমে সকলের আনন্দপূর্ন সহযোগিতায় অর্জিত অর্থ দিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষদ্র থেকে বৃহত্তর এমন স্ব-নির্ভর কার্যক্রম উদাহরণ” বাস্তবায়ন করা। সেবা-আয়-স্বনির্ভরতা এই নীতিতে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতিটি পরিবার থেকে একজন করে দক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা এবং সকলেই উন্নয়নে হবে শেয়ার। স্বনির্ভরতা অর্জনে পারিবারিক শেয়ার ভিত্তিক মেহেরপুর ব্যাংক গঠন করে দারিদ্রমুক্ত ও স্বনির্ভরতায় এগিয়ে যাওয়া। পাঁচ কোটি বৃক্ষ রোপন এবং এথেকে স্থায়ী ফান্ড গঠন। অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে, সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে হবে, হাতে সময় খুবই কম। এই আহবানগুলি দুয়ারে দুয়ারে পৌছে দেওয়ায় আমাদের মূল লক্ষ্য। বিশেষ গুরুত্বপৃর্ণ টেলিফোন নাম্বর- স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, ব্যাংক, বাজার, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিষদ,বাসস্ট্যান্ড ও সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রদর্শন করা।
প্রিয় মেহেরপুরবাসী, সময়ের প্রয়োজনে আমাদের এই আহবান। আমাদের রাজটিকা সৌভাগ্যকে সর্বোত্তম ব্যবহার করে যার যার স্থান থেকে জেলাভিত্তিক ১০ দফা উন্নয়ন ইস্যুতে আন্দোলন গড়ে তুলি। ঐতিহাসিক কারনেই মুজিবনগর খ্যাত মেহেরপুর জেলার উন্নয়নে প্রতিটি সরকারকেই কাজে লাগাতে হবে। প্রতিটি দুয়ারে দুয়ারে এই আন্দোলন ও অধিকার তুলে ধরি এবং বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। যারা মেহেরপুর উন্নয়নে ব্যাক্তিগত,সংগঠন,গণমাধ্যম,রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে অবদান রেখেছে এবং রেখে চলেছে তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ ও সম্মান জানায়। আমরা চাই ২০৫০ সালকে সামনে রেখে রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত একটি হাইভোল্টেজ মাস্টার প্লানে সকল পরিকল্পনা ও উন্নয়ন গড়ে উঠুক তেমনি এর পূর্বশর্ত নিরাপদ ঢাকা আর সম্মানজনক সুযোগ এবং কঠোর জবাবদিহিতায় স্বাধীন আধুনিক পুলিশ ও বিচার বিভাগ গড়ে তোলা। আমরা স্থায়ী উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গিকারবদ্ধ এবং গঠনমূলক সমালোচনায় বিশ্বাসী। দলমত নির্বিশেষে সকলের সাথে উন্নয়নে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সহযোগী হিসাবে পাশে দাড়াবো, তেমনি যে কোন অন্যায় অবিচারকে প্রতিবাদ প্রতিরোধ করতে নির্ভীক কন্ঠস্বর হিসাবে মেহেরপুরবাসীর পক্ষে কাজ করে যেতে চাই। শুরু একজন করলেও শেষ সকলে মিলেই করতে হবে। শান্তির দূত হিসাবে মেহেরপুর জেলা ও জেলাবসীর সর্বোচ্চ মঙ্গল কামনায় আমৃত্যু সংগ্রাম করে যেতে চাই এই স্বপ্ন পূরনে।
মেহেরপুর জেলার উন্নয়ন এর জন্য শুভ কামনা রইল।